1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪০ পূর্বাহ্ন

সুনামগঞ্জে প্রণোদনা ও রেশনিং এর দাবীতে হোটেল শ্রমিকদের বিক্ষোভ

  • আপডেট টাইম :: সোমবার, ২২ জুন, ২০২০, ৮.০২ পিএম
  • ২১২ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক::
জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমাবার বেলা সাড়ে ১১টায় সুনামগঞ্জে প্রণোদনা ও রেশনিং এর দাবীতে হোটেল শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় আলফাতউদ্দিন স্কারে সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রি বরাবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে, ই-মেইলে ৬ দফা দাবী জানিয়ে স্বারকলিপি প্রদান করা হয় । সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন সুনাম গঞ্জ জেলা সভাপতি লিলু মিয়া। স্বারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় ,বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন রেজিঃ নং-২০৩৭ এর অন্তর্ভূক্ত রেজিস্ট্রার্ড ইউনিয়ন সুনামগঞ্জ জেলা হোটেল রেস্টুরেন্ট মিস্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ-২৮৮৩ এর পক্ষ থেকে সালাম ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিশ্বব্যাপী মহামারী আকার ধারণ করায় বিশ্ব অর্থনীতির মহামন্দার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। এর ফলে ক্ষুধা-দারিদ্র্য ও বুভুক্ষাবস্থা সৃষ্টিসহ দুর্ভিক্ষ অবস্থা সৃষ্টির উপক্রম তৈরি হচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সরবরাহ চেইনের সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো গভীরভাবে সম্পৃক্ত। ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মহামন্দা ও দুর্ভিক্ষ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমাদের দেশে এখনই বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। হোটেল শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ খাতে সারাদেশে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মরত এবং তাদের উপর নির্ভরশীল রয়েছে তাদের পরিবারসমূহ। ফলে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এ খাতের উপর নির্ভরশীল হয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছে দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ। অথচ এ খাতের মালিকদের শুধু মুনাফা কেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনা এবং শ্রমিকদের দায়িত্ব গ্রহণ না করার মানসিকতার কারণে এ সেক্টরে কর্মরত শ্রমিকদের জীবনযাপন আজ অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই দেশের হোটেল রেস্টুরেন্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়ে এ খাতের কর্মরত শ্রমিকরা। প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে হোটেল-রেস্টুরেন্ট-মিস্টি-বেকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের মজুরিসহ যাবতীয় সুযোগ- সুবিধা প্রদান বন্ধ করে দেয়। এমনকি এপ্রিল, মে মাসের মজুরি ও ঈদুল ফিতরের উৎসব বোনাসও প্রদান করেনি মালিকরা, এছাড়া কোন কোন মালিক মার্চ মাসেরও মজুরি পরিশোধ করেননি। করোনা দুর্যোগের বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মালিকরা শ্রমিকদের ছুটি প্রদান করেছেন। ফলে আইন অনুযায়ী শ্রমিকরা সকলেই স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে মাসিক মজুরিসহ অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্য। কিন্তু মালিকরা তা প্রদান না করায় হোটেল সেক্টরের শ্রমিকরা খেয়ে, না খেয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে এক মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
অপরদিকে দেশের কর্মহীন হয়ে পড়া অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জন্য সরকার ত্রাণ, রেশন ও নগদ প্রণোদনা কর্মসূচি সরকার কর্তৃক ঘোষণা করা হয়। এ প্রেক্ষিতে দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও অঞ্চলভিত্তিক তালিকা করে হোটেল-রেস্টুরেন্ট-মিস্টি-বেকারি শ্রমিকরা সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে প্রদান করে। সে অনুযায়ী কোথাও কোথাও নামকাওয়াস্তে দুই একবার সরকার প্রদত্ত ত্রাণ পেলেও মূলতঃ অধিকাংশ হোটেল-রেস্টুরেন্ট-মিস্টি-বেকারি শ্রমিকরা সরকার কর্তৃক প্রদত্ত রেশন ব্যবস্থা ও নগদ প্রণোদনার সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকেছে। দেশে সাধারণ ছুটি শিথিল হওয়ার পর এবং এলাকাভিত্তিক লকডাউন কার্যকরি থাকায় আংশিক হোটেল রেস্টুরেন্ট নির্দিষ্ট

সময়ের জন্য চালু করা হয়েছে। তাতেও কর্মরত শ্রমিকদের আংশিক মজুরি প্রদান করা হয়। মূলত স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠান চালু করার ক্ষেত্রে দুর্বলতা থাকার কারণে ইতিমধ্যে কর্মরত শ্রমিকদের অনেকেই করোনা আক্রান্ত এবং করোনা উপসর্গ বহন করছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের মালিক কর্তৃক তাদের চিকিৎসাসহ, ঝুঁকিভাতা ও ক্ষতিপূরণ প্রদান করছেন না। ফলে সারা দেশের হোটেল-রেস্টুরেন্ট-মিস্টি-বেকারি শ্রমিকদের একটা বৃহৎ অংশ এখনো কর্মহীন থেকে এবং করোনা আক্রান্ত ও আতংকে থেকে দুঃখ-কষ্টে জর্জরিত হয়ে এক মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এমতাবস্থায় হোটেল-রেস্টুরেন্ট-মিস্টি-বেকারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের জন্য জরুরিভাবে সরকারি উদ্যোগে চিকিৎসা নিশ্চয়তাসহ নিয়মিত ত্রাণ, প্রণোদনা ও রেশনিং এর ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যিক প্রয়োজন। আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনা আক্রান্ত এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকরা যাতে দূর্ভোগে না পড়ে সেজন্য সরকারের উদ্যোগে প্রত্যেকে শ্রমিকের অ্যাকাউন্টে তাদের মজুরির বিপরীতে সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে । এক্ষেত্রে বাংলাদেশের শ্রমিক-কর্মচারীদের করোনাভাইরাস মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত হোটেল শ্রমিকদের বেতন সরকারিভাবে ১০০% পরিশোধ করার দাবি অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত।
তাই হোটেল সেক্টরে দীর্ঘদিন ধরে হোটেল শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা বর্তমান পরিস্থিতিতে হোটেল শ্রমিক ও হোটেল শিল্পকে রক্ষার জন্য নিম্নোক্ত প্রস্তাবনা আপনার সমীপে উত্থাপন করছি।
(১) হোটেল শ্রমিকদের পূর্ণাঙ্গ মজুরিসহ প্রাপ্ত সকল সুযোগ- সুবিধা প্রদান করতে হবে।
(২) মহামারী দুর্যোগের এই সময় হোটেল সেক্টরে কোন লে-অফ, অব্যাহতি বা ছাঁটাই করা যাবে না। এ বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট পরিপত্র জারি করতে হবে ।
(৩) যেসব শ্রমিক ইতিমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছে তাদের আইসোলেশন ও যথাযথ চিকিৎসার সমুদয় দায়িত্ব সরকার ও মালিককে বহন করতে হবে।
(৪) সকল হোটেল শ্রমিকদের রেশনিং কার্ডের মাধ্যমে চাল- ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী স্বল্প মূল্যে প্রদান করতে হবে।
(৫) কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করাসহ ঝুঁকি ভাতা এবং করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে এক জীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
(৬) সরকার কর্তৃক প্রণোদনা হিসেবে মাসিক ন্যুনতম ১০ হাজার টাকা সরাসরি শ্রমিকদের প্রদান করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!