বিশেষ প্রতিনিধি::
ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাসের ফেইসবুক পেইজে (U.S. Embassy-Dhaka) স্থান পেয়েছে সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর ধর্মীয় স্থাপনা পাগলা জামে মসজিদের ছবি। পেইজে এই দৃষ্টিনন্দন মসজিদের ছবিটি জুড়ে দিয়ে পবিত্র জুমআর শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষদের। ছবিটি দূতাবাসের নিজস্ব পেইজে জুড়ে দিয়ে ‘জুম্মা মুবারক’ জানানো হয়। ক্যাপশনে লেখা হয়, (Pagla Jame Mosque, known locally as Raypur Boro Masjid, is located in Sunamganj district. It lies on the banks of the Mahashing River and was built by local businessman Yasin Mirza in 1931)। শুক্রবার দুপুর ১২টায় এমবাসির ফেইসবুক পেইজে এ সংক্রান্ত পোস্ট দেওয়া হয়। পোস্ট দেওয়ার পর দুপুর ২টা পর্যন্ত ঐতিহাসিক এই ধর্মীয় স্থাপনার পোস্টে লাইক দিয়েছেন ৮৫৯জন। মন্তব্য করেছেন ২৮জন। শেয়ার করেছেন ২৫জন।
মন্তব্যে সুনামগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহীন চৌধুরী দূতাবাসের সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়ে মন্তব্য করেন, Thank u us embassy ❤ for explore the ancient mosque.
সেলিম আহমদ শিবলী নামের সুনামগঞ্জের একজন মন্তব্য করেন, ‘জুম’আ মোবারক। ধন্যবাদ ইউ এস এম্বাসি❤, আমাদের সুনামগঞ্জে আমার বাড়ীর পাশের আমাদের গর্ব এই সুন্দর মসজিদটি পোস্ট করার জন্যে।
আবু শামস ফাহিম নামের একজন মন্তব্য করেন Our pride ❤️ Honourable Ambassador please try to visit our Tangua Haor and Hakaluki you will enjoy. তিনি রাসমার সাইট ও বিশ্বঐতিহ্য টাঙ্গুয়ার হাওর ও হাকালুকি হাওর ঘুরে দেখার জন্য আহ্বান জানান। এভাবে অনেকেই সুন্দর মন্তব্য করে আমেরিকা দূতাবাসের সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।
উল্ল্যেখ্য ১৯৩১ সনে সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাগলা রায়পুরের মহাজন ইয়াসীন মির্জা প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেন মসজিদটি। মসজিদটিকে আকর্ষণীয় করতে নানা ধাপে ১০ বছর ধরে কাজ চলে বলে জনশ্রুতি আছে। কথিত আছে, এ মসজিদের প্রধান মেস্তরী অবিভক্ত ভারতের কলকাতা থেকে নিয়ে আসেন ইয়াসীন মীর্জা। প্রধান মেস্তরীর সহকর্মীরাও ছিলেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা শ্রমিক। সুনামগঞ্জবাসী এই মসিজদকে রায়পুর ‘বড় মসজিদ’ হিসেবে জানে। প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর সুন্দর এর গায়ে এখনো ধরে রেখেছে মসজিদটি।
সিলেট-সুনামগঞ্জের পাগলাবাজার সংলগ্ন রায়পুর নামক স্থানে ইয়াসীন মির্জা নিজের পৈত্রিকস্থানে মসজিদটি নির্মাণ করেন। আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর দ্বিতল এই মসজিদে রয়েছে ৩টি বিরাট গম্বুজ। মসজিদের রড আনা হয়েছিল কলকাতা থেকে। মসজিদে ব্যবহৃত পাথর আর বালু আনা হয় জাপান থেকে। ভেতরের কারুকার্যে ব্যবহৃত পরশ পাথর মার্বেল পাথর আনা হয় ইতালি থেকে। ইয়াসীন মীর্জা মসজিদটিকে আকর্ষণীয় করতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আরো বিভিন্ন জিনিষের সংমিশ্রণ ঘটান।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সার্ক চেস্বারের নির্বাহী সদস্য খায়রুল হুদা চপল বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী সৌন্দর্যময় ও নন্দিত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ছবি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের অফিসিয়াল পেইজে স্থান পেয়েছে, যা আনন্দ গৌরবের। দেশ ও বিদেশের কোটি মানুষ দেখছে আমাদের ঐতিহ্য। আমাদের আরো যত ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে তাও যেন অন্যান্য দূতাবাস ও সংস্থা তুলে ধরে। বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক আমাদের ঐতিহ্যের সুনাম।