স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির একদিকে উন্নতি অন্যদিকে অবনতি হচ্ছে। পানি কমছে জেলার প্রধান নদী সুরমার। মঙ্গলবার সকাল ১২টায় সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পুরাতন সুরমায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পুরান সুরমায় দিরাই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৮ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দিরাই-শাল্লা উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। নি¤œাঞ্চলের রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। তবে বন্যায় খামারিদের ১ হাজার ১৯৩টি পুকুরের প্রায় ৩০ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
গত দুই দিন ধরে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সুনামগঞ্জ ও ছাতক শহরের নদী তীরবর্তী এলাকা থেকে পানি কমছে। তবে হাওরের দিকের এলাকায় পানি বেড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারন। দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে জেলায় ১ হাজার ১৯৩টি পুকুরের প্রায় ৩০ কোটি টাকার মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। এতে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক। গত ৫ দিনের বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা দেখা দেওয়ায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪৬৮টি পুকুর, দিরাইয়ে ২৬টি, ধর্মপাশায় ৩৪২টি, ছাতকে ২১০টি, জামালগঞ্জে ৯৬টি, বিশ্বম্ভরপুরে ৪৫০টি, তাহিরপুরে ৭০টি, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ৯০টি এবং দোয়ারাবাজার উপজেলায় ২৬২টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। মাছের সঙ্গে পুকুরের অবকাঠামোরও ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া বন্যায় ২ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমির আউশ ধান ও ১৯০ হেক্টর জমির সব্জি ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে নতুন করে আর কোন আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়নি। ১২৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১ হাজার ১৯৪টি পরিবার আশ্রয় নিলেও গতকাল মঙ্গলবার কিছু পরিবার নিজেদের বাড়িতে ফিরেছে।
মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের খামারি জুনেদ আহমদ বলেন, আমার পুকুরের প্রায় ৫-৬ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। দুই বছর আগেও একবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলাম। এখন পথে বসার মতো অবস্থা হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মৎস্যখাতে। পুকুরে যারা মাছ চাষ করেছেন তাদের বেশিরভাগই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বিটার ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত খামারিসহ ক্ষয়-ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করছি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে সুরমা নদীর পানি কমছে। বৃষ্টিপাতও কমেছে। তবে পুরাতন সুরমায় পানি বাড়ছে। পুরাতন সুরমার পানি দিরাই পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দিরাই-শাল্লা উপজেলার কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। নতুন করে আর কোন আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়নি এবং কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে আর আসেননি বলে জানান তিনি।