স্টাফ রিপোর্টার::
দিরাই-শাল্লা আসনে মনোনয়ন পাওয়া সদ্যপ্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্যসহ নানা ক্ষেত্রে এক আলোকিত নারী। বাবা মার বড় সন্তান তিনি। শৈশব কৈশর কেটেছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মালি গ্রামে। আইনবিদ বাবা ভাঙ্গা এলাকার এক বনেদি পরিবারের সন্তান হলেও তার আদিনিবাস ছিল কলকাতায়। প্রথম জীবনে অধ্যাপনাকে বেছে নিয়েছিলেন জয়া। তিনি ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে বিশ্বের বৃহত্তম বড় বেসরকারি সংগঠন ‘ব্রাক’ এর শিক্ষাবিভাগের প্রধান ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের রাজনৈতিক ছায়াসঙ্গী হিসেবে তিনি প্রতিটি নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
এছাড়াও তিনি ফরিদপুরের কে এম ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ঢাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রীন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলেও শিক্ষকতা করেছেন।
কর্ম জীবন শুরুতেই রাজেন্দ্র কলেজের প্রভাষক হিসেবে যোগদানের পরের বছর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। তিনি ওই সময় মা বাবার সঙ্গে ভারতে চলে যান। সেখানেই সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কলকাতাতেই সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন জয়া সেন। সুরঞ্জিত সেন তখন টেকের ঘাটের সাব-সেক্টর কমান্ডার। মাত্র ছয়জন সহযাত্রী সহবর সেজে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গিয়েছিলেন কলকাতায়। জয়াসেনকে নিয়ে ফিরে আসেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে। এরপর আজীবন ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন তারা।
ব্যাক্তি জীবনে জয়া-সুরঞ্জিত দম্পতির একমাত্র সন্তান সৌমেন সেনগুপ্ত। তিনিও উচ্চশিক্ষিত।
আশির দশকে এরশাদ সরকারের মার্শাল ল চলাকালে নির্যাতিত হয়ে কারাবরণ করেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এই সময় জয়া সেন গুপ্ত চাকুরি নেন ব্রাকের শিক্ষা বিভাগে। তিনি অবসরে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই বিভাগের প্রধান ছিলেন। ব্রাক শিক্ষায় বিশ্বব্যাপী যে সফলতা দেখিয়েছে তাতে জয়া সেনগুপ্তের অবদান বেশি।
জয়া সেনগুপ্ত একজন সাহিত্যনুরাগীও। ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি মনসামঙ্গল (পদ্মপুরান) ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ব্যক্তি জীবনে জয়াসেন সদালাপি, মুক্তমনা, বিজ্ঞানমনষ্ক এক আধুনিক নারী। দিরাই-শাল্লার তৃণমূল আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক।