বিশেষ প্রতিনিধি::
হাওর-ভাটির রাজনীতির মহীরুহ, জননেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতিধন্য দিরাই-শাল্লার আপামর মানুষ এখনো শোকাতুর। এই শোকের মধ্যেও তারা নেতার স্বপ্নপূরণের সারথি হিসেবে তাঁর সুযোগ্য সহধর্মিনী ড. জয়া সেনগুপ্তকে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার গুরু দায়িত্ব অর্পন করে তার অমতেই। তৃণমূল আওয়ামী লীগ স্বামীর আসনে তাকে মনোনয়ন দিতে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নিয়েছিল। তৃণমূলের সেই প্রতিফলন ঘটেছে জয়া সেনগুপ্তের সুনামগঞ্জ-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রদানের মাধ্যমে।
প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়ে জয়া সেনগুপ্তের হৃদপি-ে এখনো রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ৪৬ বছরের সংসারের অনেক সুখস্মৃতি ও দুঃখদিন তাঁর দৃষ্টি চত্বরে উঁকি দিচ্ছে। বুকের ভেতর ব্যথা পাথরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আজ তিনি আসছেন দিরাই উপজেলায়। তাঁর গায়ে শোকের চাদর জড়ানো। সদ্য বিধবা জয়াসেন গুপ্ত স্বামীর শোকসভায় উপস্থিত থাকবেন। তিনি শোকসভায় উপস্থিত থাকলেও দিরাই-শাল্লার লাখো মানুষ নেতার শোক বুকে নিয়েই তার সহধর্মিনীকে গ্রহণ করবেন। আগামী দিনের রাজনৈতিক অভিভাবক হিসেবে অবহেলিত এলাকার উন্নয়নের দায়িত্ব তাকেই অর্পন করবেন তারা। স্বামী হরানোর ক্ষত নিয়েই জয়া সেন আপামর মানুষের ভালোবাসায় ¯œাত হবেন। সেই কঠিন দায়িত্ব নিতেও তিনি প্রস্তুত বলে ঘনিষ্ট নেতাকর্মীরা জানান।
দিরাই-শাল্লার তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, ১৯৭১ সনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সঙ্গে বিবাহ বন্ধবে আবদ্ধ হওয়ার পর জয়া সেনগুপ্ত তার প্রিয়তম স্বামী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পরবর্তী প্রতিটি নির্বাচনে ছায়াসঙ্গী ছিলেন। সর্বত্র তাকে দেখা না গেলেও নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছিল তার গোপন যোগাযোগ। তিনি নির্বাচনের আগে দিরাই বাসভবনে এসে তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করতেন, কোথায় কি সমস্যা আছে তা জেনে সমাধানের উদ্যোগ নিতেন। তাছাড়া সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত যখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন তখন এলাকার সাধারণ অনেকে তাঁর সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করতে পারতোনা। তখন কর্মীরা জয়া সেনগুপ্তকেই শোনাতেন তাদের কথা। এভাবে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাদের আস্থাভাজনে পরিণত হন।
শাল্লা উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক পীযুষ দাশ বলেন, এখন থেকে আমরা প্রয়াত নেতার ছায়া তার সুযোগ্য সহধর্মিনী ড. জয়া সেনগুপ্তর মধ্যেই দেখতে চাই। আমরা নেতা হারানোর শোক নিয়েই আগামী দিনের রাজনৈতিক অভিভাবক হিসেবে আজ তাকে হৃদয় উজার করে বরণ করব। আগে যেভাবে আমাদের নেতার দিক-নির্দেশনা মেনে কাজ করতাম এখন তার কথা মেনে কাজ করব।
জয়া সেনগুপ্ত মঙ্গলবার রাত সোয়া নয়টায় এই প্রতিবেদককে বলেন, আমরা এখনো শোকাতুর। প্রিয় নেতার প্রতি এলাকার মানুষ শ্রদ্ধা ও স্মরণের জন্য যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন সেখানে আমি উপস্থিত থাকব। তারপরে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে আমার পরবর্তী নির্বাচনী প্রস্তুতি সারব। তিনি সুনামগঞ্জের সবাইকে তার প্রয়াত স্বামীর জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানানা।