হাওর ডেস্ক::
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন তিন হাজার ৯ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ৩৫ জন। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন দুই লাখ ৩২ হাজার ১৯৪ জন।
আজ বুধবার (২৯ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা ৩০ জন পুরুষ এবং পাঁচজন নারী। এঁদের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে সাতজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে সাতজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ৩৫ জনের।
এ পর্যন্ত যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের মধ্যে পুরুষ দুই হাজার ৩৮৮ জন এবং নারী ৬৪৭ জন। আর বয়স বিবেচনায় এ পর্যন্ত যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁরা এঁদের বয়স ০ (শূন্য) থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৮ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩০ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৮৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২০১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪৩১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮৭৬ জন এবং ষাটোর্ধ এক হাজার ৩৯৪ জন।
জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের ১৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের আটজন, খুলনা বিভাগের দুইজন, সিলেট বিভাগের দুইজন, রাজশাহী বিভাগের দুইজন, ময়মনসিংহ বিভাগের দুইজন, বরিশাল বিভাগের চারজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ২৯ জন এবং বাসায় ছয়জন।
বিভাগ অনুযায়ী এ পর্যন্ত যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁরা ঢাকা বিভাগের এক হাজার ৪৫৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৭৩৯ জন, রাজশাহী বিভাগের ১৭৯ জন, খুলনা বিভাগের ২১৪ জন, বরিশাল বিভাগের ১১৯ জন, সিলেট বিভাগের ১৪৬ জন, রংপুর বিভাগের ১১৫ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৬৫ জন।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৮৭৮ জন। এ নিয়ে দেশের করোনা সংক্রমণ থেকে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন এক লাখ ৩০ হাজার ২৯২ জন।
ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৪ হাজার ২৫৩টি। একই সময় পূর্বের নমুনাসহ পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ১২৭টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে তিন হাজার ৯ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন দুই লাখ ৩২ হাজার ১৯৪ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ লাখ ৫১ হাজার ২৫৮টি।
ব্রিফিংয়ের শুরুতেই জানানো হয়, করোনা সন্দেহে নমুনা পরীক্ষায় দেশে আরো একটি পরীক্ষাগার সংযোজিত হয়েছে। চাঁদপুর মেডিক্যাল কলেজে ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের উদ্যোগে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির তত্ত্বাবধানে চালু হওয়া এ পরীক্ষাগারটি নিয়ে করোনা পরীক্ষায় দেশে মোট পরীক্ষাগারের সংখ্যা দাঁড়াল ৮২টিতে।
আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ৮২৭ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ১৪৬ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ৪৯ হাজার ৩১৬ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩০ হাজার ৬৪৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৬৬৯ জন।
কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে গেছেন এক হাজার ৯৫৫ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট চার লাখ ৩১ হাজার ৯৪৪ জন। ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৫৭০ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ৭৪ হাজার ৭০০ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৭ হাজার ২৪৪ জন।
সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর’র হটলাইনে কল এসেছে ৭৫ হাজার ৮৯৯টি। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
টেলিমেডিসিন সেবায় প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক এবং ১০ জন স্বাস্থ্যতথ্য কর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিনে করোনা সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।