হাওর ডেস্ক::
সিলেটে হচ্ছে দেশের প্রথম ‘ভূতাত্ত্বিক জাদুঘর’। আর সেটি হচ্ছে সিলেটের জাফলংয়ে। ইতোমধ্যে এর প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)। বিষয়টি সিলেটভিউ-কে নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুস সাকিব।
জানা গেছে, সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ের প্রতিবেশ-সংকটাপন্ন জায়গায় (ইসিএ) পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেশের প্রথম ‘ভূতাত্ত্বিক জাদুঘর’ স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে বিএমডি। বিএমডি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গত সপ্তাহে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসনকে দিয়েছে।
সরকারি চিঠিতে বলা হয়েছে, জাফলংয়ে উন্মুক্ত শিলাস্তর, চুনাপাথর সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য জাতীয় স্বার্থে ২৫ দশমিক ৫৯ একর ভূমিকে ভূতাত্ত্বিক ঐতিহ্য ঘোষণা করা হয়েছে। ওই ভূমিতে আন্তর্জাতিক মানের একটি ভূতাত্ত্বিক জাদুঘর নির্মাণ করা হবে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাদুঘর নির্মাণে ইতিমধ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ জাদুঘর দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হবে। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ও সরকারের গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিএমডি আইনিভাবে মোকাবিলার প্রস্তুতিও নিয়েছে।
বিএমডি’র পক্ষ থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে গোয়াইনঘাটের ইউএনও মো. নাজমুস সাকিব আজ রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) সিলেটভিউ-কে বলেন, বিএমডির মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গত বৃহস্পতিবার আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। এখানে (জাফলংয়ে) দেশের প্রথম ‘ভূতাত্ত্বিক জাদুঘর’ স্থাপনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিএমডির কাজে সার্বিক সহায়তা করতে উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি রয়েছে।
এদিকে, ‘ভূতাত্ত্বিক জাদুঘর’ স্থাপনের সে জায়গায় সম্প্রতি উচ্চ আদালতের নির্দেশনাসংবলিত একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে পাথর উত্তোলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ‘মেসার্স জালালাবাদ লাইম ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
তবে ওই ভূমিতে আন্তর্জাতিক মানের ভূতাত্ত্বিক জাদুঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ও সরকারের গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিএমডি ইতোমধ্যে আইনিভাবে মোকাবিলার সকল প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ভারতের মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষা নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি প্রকৃতিকন্যা জাফলং। পর্যটন কেন্দ্র ছাড়াও ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জন্য সিলেটের জাফলং অঞ্চলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রয়েছে চুনা পাথরের খনি। ভূতত্ত্ববিদদের কাছে অঞ্চলটি দেশের ভূতাত্ত্বিক ‘জাদুঘর’ হিসেবে পরিচিত।
ডাউকি নদীর পাড়ে সংগ্রাম বিজিবি ক্যাম্পের পাশের একটি টিলায় উন্মুক্তভাবে চুনাপাথরের স্তরসহ কয়েকটি অতি পুরোনো পাললিক শিলার স্তর রয়েছে। যা বাংলাদেশের কোথাও নেই। তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও গবেষণার কাজের ক্ষেত্রে এ শিলাস্তরগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
(সিলেটভিউ)