1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
জামালগঞ্জে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা সিলেটে শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসারকে অপসারণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কার্যক্রম ২৫০ শয্যা হাসপাতালে সেবার মান বাড়ানোর দাবিতে মতবিনিময় সুনামগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ বন্যার্তদের সহায়তায় সুনামগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমির ব্যতিক্রমী ছবি আঁকার কর্মসূচি জগন্নাথপুরে শিক্ষিকা লাঞ্চিত: দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মরদেহ হস্থান্তর করলো মেঘালয় পুলিশ কাদের সিদ্দিকী বললেন: বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয় বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ২০ লাখ শিশু ঝুঁকিতে : ইউনিসেফ

পানিতে ডুবে দেশে প্রতিদিন গড়ে ৫০ মৃত্যু

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ৭.৩৬ পিএম
  • ১৫৪ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক ::
পানিতে ডুবে মৃত্যু সারা বিশ্বে আঘাতজনিত কারণে শিশুমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর তিন লাখ ৫৯ হাজার ৪০০ জন ব্যক্তি পানিতে ডুবে মারা যান। এদের ২০ শতাংশের বয়স পাঁচ বছরের কম। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হারে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম। বাংলাদেশে এক থেকে চার বছর বয়সী শিশুদের মোট মৃত্যুর ৪৩ শতাংশের জন্য দায়ী পানিতে ডুবে যাওয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দেশে প্রতিদিন গড়ে ৫০ জন পানিতে ডুবে মারা যায়। এদের মধ্যে ৩২ জনই চার বছরের কম বয়সী। বছরে এ সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১২ হাজারে। এ ছাড়া পানিতে ডোবার কারণে আরো ১৩ হাজার শিশু স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করে। এক লাখ শিশু পানিতে ডোবার কারণে বিভিন্নভাবে আহত হয়।

আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যম ও উন্নয়ন যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সমষ্টি আয়োজিত সাংবাদিকদের এক অবহিতকরণ কর্মশালায় এসব তথ্য উঠে আসে। দি ডেইলি স্টার সেন্টারে এ কর্মশালায় জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমের ২০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক দাতা সংস্থা গ্লোবাল হেল্থ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের সহযোগিতায় কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় জানানো হয়, শিশু মৃত্যুর জন্য দায়ী বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকে বৈশ্বিকভাবে এসডিজির অন্তর্ভুক্ত করা হলেও পানিতে ডুবে মৃত্যুকে অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত করা হয়নি। ফলে অসুস্থতাজনিত কারণে শিশু মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব হলেও পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার প্রতিরোধে কর্মসূচি গ্রহণ না করা হলে সার্বিকভাবে শিশুমৃত্যুর উচ্চহার থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কর্মশালায় বলা হয়, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে পাঁচ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৫ নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। রোগ-বালাইয়ের বাইরেও বাংলাদেশে প্রতিবছর বড় সংখ্যক শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। তাই শিশুমৃত্যু নিয়ে এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জনে প্রতিরোধযোগ্য এ মৃত্যু কমানো জরুরি। পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে বহু সংখ্যক শিশুকে পানিতে ডুবে মৃত্যু থেকে রক্ষা করা সম্ভব। এটি করতে পারলে এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে সমষ্টি পরিচালিত এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ২৫০টি ঘটনায় ৪৪৮ জন ব্যক্তি পানিতে ডুবে মারা গেছে। এদের মধ্যে ৩১৭ জনের বয়স ৯ বছরের কম। মৃতদের মধ্যে ১৬৯ জন নারী বা কন্যাশিশু রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুরা পরিবারের অন্য সদস্যদের অগোচরে বাড়ির আশেপাশের পুকুর বা জলাশয়ে চলে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় আগস্ট মাসে।

কর্মশালায় বলা হয়, পানিতে ডুবে মৃত্যুর সবগুলো ঘটনার তথ্য গণমাধ্যম পায় না। এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে কোনো কার্যকর তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা এখনো গড়ে উঠেনি। আবার গণমাধ্যম প্রতিবেদনগুলো শুধুমাত্র ঘটনাকেন্দ্রিক। এ নিয়ে গভীরতাধর্মী প্রতিবেদনের অভাব রয়েছে। গভীরতাধর্মী প্রতিবেদনে গণমাধ্যমগুলো গুরুত্ব দিলে বিষয়টি নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের গুরুত্ব পাবে এবং এ নিয়ে জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়টিকে তরান্বিত করবে।

কর্মশালায় বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) পরিচালক ড. আমিনুর রহমান জানান, এত শিশুর মৃত্যু সত্বেও বিষয়টি পরিকল্পনা ও নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে অগ্রাধিকার তালিকায় জায়গা করে নিতে পারেনি। ফলে এ নিয়ে সরকারি পর্যায়ে বা জাতীয়ভাবে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। তিনি জানান, সিআইপিআরবি ২০০৫ সাল থেকে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে কার্যকর স্থানীয় ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করে আসছে। এতে দেখা গেছে, দারিদ্র্য, অসচেতনতা ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের অভাবের কারণে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।

বাংলাদেশে শিশুরা পানিতে ডুবছে বাড়ির ২০ গজের মধ্যে এবং মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটছে মূলত সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটার মধ্যে। এ সময়ে মা-বাবা, বড় ভাই-বোন বা পরিচর্যাকারীরা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ ছাড়াও উদ্বেগের বিষয় হলো বাড়ির আশেপাশের ডোবা-নালা-পুকুর-খাল-বিল সবকিছু উন্মুক্ত। শিশুরা অন্যদের অলক্ষ্যে অবাধে জলাশয়ে চলে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়।

সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে তিনি জানান, দিনের প্রথমভাগে শিশুদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রাখা হলে বাংলাদেশে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ রোধ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে গ্রামভিত্তিক শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র সফলভাবে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে কার্যকর। পাশাপাশি এ গ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্যও সহায়ক। এ ধরনের দিবাযত্নের ব্যবস্থা বাংলাদেশের মতো অন্যান্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার দূরীকরণে বিশেষ অবদান রাখতে পারে।

উল্লেখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৭ সালে ণ্টপ্রেভেন্টিং ড্রওনিং: আন ইমপ্লিমেন্টেশন গাইড’ এ নির্দেশনা দিয়েছে যেখানে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে ডে-কেয়ার সেন্টারের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়াও নীতি পর্যালোচনা ও দেশীয় পেক্ষাপট বিবেচনায় নেয়ার কথাও রয়েছে। ভারত, ভিয়েতনামসহ অনেক দেশেই কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকারকে যুক্ত করে গৃহীত কার্যক্রম সফল হয়েছে। আমাদের দেশে সিআইপিআরবির কমিউনিটি ডে-কেয়ার মডেল ণ্টভাসা’ ও ণ্টসলিড’ এক্ষেত্রে সাফল্য এনেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, আইসিডিডিআরবি ও সিআইপিআরবির যৌথ গবেষণায় পাওয়া তথ্য বলছে এ মডেল বাস্তবায়ন করে বছরে আট হাজার শিশুর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। প্রয়োজন কার্যকর উদ্যোগ, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় ও প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করা।

সাংবাদিকদের জন্য আয়োজিত এ কর্মশালার বিভিন্ন অধিবেশ পরিচালনা করেন সমষ্টি’র পরিচালক ও চ্যানেল আইয়ের জেষ্ঠ্য বার্তা সম্পাদক মীর মাসরুর জামান, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকিসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি লিড রুহুল কুদ্দুস প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!