স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জকে যারা দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তাদের কোন জ্ঞানই নেই- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামালের এমন বক্তব্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এই বক্তব্য ভাইরাল হয়ে পড়েছে। তার বক্তব্য নিয়ে তীর্যক স্টেটাস দিয়েছেন দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা হাওরাঞ্চলের মানুষজন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যারাতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সচিব সঞ্চালকের দায়িত্ব নিয়ে সুনামগঞ্জকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবির আন্দোলনকারীদেরও সমালোচনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলি। দেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নামে একটা আইন আছে। এই আইনের ২২ ধারায় বলা হয়েছে কোন এলাকার অর্ধেকের উপরে জনসংখ্যা মরে যাওয়ার পর ওই এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করতে হয়। না জেনে যারা এমন এমন সস্তা দাবি জানায় তাদের কোনপ্রকার জ্ঞানই নেই।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিবের এমন মনগড়া তথ্য শোনার পর উপস্থিত জনপ্রতিনিধি, সুধীজন, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের লোকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সেইসাথে ফসলহার কৃষকের পক্ষে আন্দোলনকারীদের নিয়ে সচিবের এমন কটূক্তির প্রতিবাদে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীরা সভা থেকে বেরিয়ে আসেন।
সভায় উপস্থিত সুধিজনেরা জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২ এর ২২ ধারার কোন উপধারায় দুর্গত এলাকা ঘোষণা করতে অর্ধেকের বেশি মানুষ মারা যাওয়ার কোন শর্তের কথা কোথাও উল্লেখ নাই।
অবজ্ঞার সুরে সচিব আরো বলেন, কিসের দুর্গত এলাকা। একটি ছাগলও তো মারা যায়নি। খাদ্যগুদামে প্রচুর খাদ্য মজুদ আছে।
এদিকে একই সভায় প্রধান অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ফসলহারা কৃষকদের প্রতি আন্তরিকতা রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, আমাদের এই দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি ও সামর্থ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ৬ মাস কেন, প্রয়োজনে ৬ বছর খাওয়ানোর মজুদ আমাদের রয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন একটি মানুষও না খেয়ে মারা যাবেনা। মন্ত্রী সুনামগঞ্জ জেলার দেড় লাখ পরিবারকে তিন ধরনের খাদ্য সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রস্তুতিসভায় ফসলহারা কৃষকের প্রতি মন্ত্রীর আন্তরিকতা ও মমতা লক্ষ্য করা গেলেও সচিবের এই মারকুটে ও দায়িত্বহীন বক্তব্যে উপস্থিত সুধীজন মর্মাহত হন।