হাওর ডেস্ক::
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মদিনে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে গেছে সুনামগঞ্জের শাল্লায়। উপজেলার হবিপুর ইউনিয়নের নববি গ্রামে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়েছে হেফজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের অনুসারীরা। মাইক দিয়ে ঘোষণা করে ৮০টি হিন্দু বাড়ি লুট করা হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, যারা এসব কাজ করেছে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে।
আজ শুক্রবার ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে মোস্তাফা জব্বার লিখেছেন, ‘১৭ মার্চ সকালটা চরম দুঃশ্চিন্তায় কেটেছিলো। আমার গ্রামের পাশের থানা শাল্লার নোয়াগাও এ মাইক দিয়ে ঘোষণা করে ৮০টি হিন্দু বাড়ি লুট করা হয়েছিলো। সকালেই কথা বলেছিলাম সুনামগঞ্জের এসপির সাথে। সেদিনই বিকালে সুযোগ হয় শাল্লারই কৃতি সন্তান চৌধুরি মামুন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে। পরদিন র্যাবের ডিজি সেই গ্রামের ঘরে ঘরে যান। গতকাল জানলাম সেই ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ জানলাম ২২ জন গ্রেফতার হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের অ্যাকশনতো এমনই হবার কথা। ধন্যবাদ মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, ডিজি র্যাব, এসপি সুনামগঞ্জ ও পুলিশ বাহিনীকে।’
মোস্তফা জব্বারের এমন অবস্থানকে সবাই সাধুবাদ জানাচ্ছেন। পাশাপাশি বিদ্যুৎ চক্রবর্তী নামের একজন কমেন্টবক্সে লিখেন, ‘স্যার আপনার ভুমিকা খুবেই প্রসংশনীয়। এটা আমার পরিচিত গ্রাম। আমি দীর্ঘ ৭ বছর কাটিয়েছি এলাকায়। বর্তমানেও বছরে দু-তিন বার যাওয়া হয়। আমার এক নিকট আত্মিয়ের বাড়ির অবস্থা খুবেই খারাপ। ভাগনেটাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। পিটিয়েছে। প্রায় পূরো গ্রাম তছনছ। শোনা কথা আর বিশ্বাস হয় না। আইওয়াসের জন্য ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ মুল হোতারা দিব্যি ঘুরে বেড়াছে, টিভির লাইভ শোতে এসে বড় বড় কথা বলছে। প্রশাসন নিরব ভূমিকা আছে। লাইভ ভিডিওটা দেখলে অন্তত ৫০ জনকে সরাসরি চেনা যায়। ধন্যবাদ স্যার আপনার উদারতার জন্য। আশা করি প্রকৃত দোষী ও উস্কানিদাতারা যথাযথ বিচার পাবে।’
এই কমেন্টের জবাবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী লিখেছেন, ‘বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, ভরসা রাখেন। কোন ছাড় হবে না।’
উল্লেখ্য, লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) গভীর রাতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে অন্তত ২০-২৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক জানিয়েছেন, ২২ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটক করার অভিযান চলছে। অভিযান পরিচালনার স্বার্থে আটকদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। পুলিশ জানায়, গ্রামবাসীর পক্ষে দায়ের করা মামলার বাদী হয়েছেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল। এই মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।