1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

মামুনুলের সমালোচনা করে বিপাকে শিক্ষক-দুই যুবলীগ নেতা: নিরাপত্তার জন্য ডিসিকে উপমন্ত্রীর নির্দেশ

  • আপডেট টাইম :: সোমবার, ৫ এপ্রিল, ২০২১, ৯.১২ পিএম
  • ২৯৮ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি:
হেফাজত নেতা মামুনুল হক ও শিশু বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে নিয়ে সমালোচনার অভিযোগে দিরাইয়ে তোপের মুখে পড়েছেন এক স্কুল শিক্ষক। তিনি এখন হেফাজত নেতাকর্মীদের হুমকিতে আতঙ্কে আছেন। শালিস বসিয়ে হেফাজত নেতাকর্মীরা তার চাকুরিচ্যুতির দাবি করেছে। এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করায় প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। এ ঘটনার খবর পেয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার নওফেল সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসককে সোমবার সন্ধ্যায় ফোন করে ওই শিক্ষকের নিরাপত্তা দেখভালের নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক বিষয়টি এই প্রতিবেদককে স্বীকার করেছেন।
এদিকে একই ঘটনার জের ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করায় তাহিরপুরে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান যুবলীগ নেতা ও শাল্লা উপজেলায় আরেক যুবলীগ নেতা আতঙ্ক ও হুমকির মুখে আছেন। তাহিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও যুবলীগ নেতা এমাদ হোসেন জয়কে তাৎক্ষণিক মামলা দিয়ে পুলিশ আদালতে পাঠানোর পর সোমবার দুপুরে তাকে জামিন দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে শাল্লা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও উপজেলা যুবলীগ নেতা অরিন্দম অপু চৌধুরীর বিরুদ্ধেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় তিনি নিরাপত্তাহীন আছেন। স্থানীয় প্রশাসনসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে তিনি বিষয়টি অবগত করেছেন। এ ঘটনাটি কেন্দ্রীয় যুবলীগের পক্ষ থেকে পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে বলে একটি বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, রবিবার সকালে দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের বাংলাবাজারে একটি হোটেলে নাস্তা করছিলেন রফিনগর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসবি গোলাম মোস্তফা। এসময় বাজারে মোবাইল ফোনে কয়েকজন ব্যক্তি মাওলানা মামুনুল হক ও শিশু বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানীর বক্তব্য শুনছিল। তিনি তাদেরকে এসবে বিশ্বাস না করে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান। এসময় স্থানীয় এক হেফাজত নেতা ওই শিক্ষকের বক্তব্য শুনে উত্তেজিত হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমানার অভিযোগ আনেন। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে বাজারে বিক্ষোভ করেন মামুনুল হকের অনুসারীরা। তারা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে তার অপসারণ দাবি করেন। বিষয়টি এক পর্যায়ে বড় ঘটনার দিকে মোড় নেয়। খবর পেয়ে দিরাই উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন, ওসি আশরাফুল ইসলাম, রফিনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রেজোয়ান হোসেন খানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জরুরি সভায় বসেন। সভায় হেফাজতের স্থানীয় অনুসারীরাও যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং প্রধান শিক্ষক এসবি জয়নাল আবেদিনকে চাকুরিচ্যুতির হুমকি দেন। চাকুরিচ্যুতি না করলে তার রেহাই নেই এমন হুমকিও দেন তারা। এক পর্যায়ে তাদের অনড় অবস্থানের কারণে ও প্রশাসনের অনুরোধে প্রধান শিক্ষক ক্ষমা চান। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলেও হেফাজত অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে প্রধান শিক্ষককে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে তাকে নানাভাবে হুমকি ধমকি অব্যাহত রেখেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান রেজোয়ান হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক কি বলেছিলেন আমরা কেউ শুনিনি। হেফাজতের স্থানীয় একজন হুজুর বিষয়টি শুনে অন্যান্যদেরও অবগত করেন। এতে উত্তেজনা দেখা দেয়। তারা ওই শিক্ষকের চাকুরিচ্যুতিরও দাবি জানান। আমরা তাদেরকে অনুরোধ করে নিবৃত্ত করি। পরে আমরা পরিস্থিতি শান্ত করতে প্রধান শিক্ষককে দিয়ে ক্ষমা চাওয়াই।
দিরাই থানার ওসি মো. আশরাফুল আলম বলেন, খবরটি শোনার পরই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। তবে কিছু লোক প্রধান শিক্ষকের চাকুরিচ্যুতি ও বিচার দাবি করেছিল। আমরা বুঝিয়ে সুঝিয়ে বিষয়টি শেষ করে দিয়ে এসেছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল বলেন, হেফাজত নেতার সোনারগাও কাণ্ডের ঘটনায় সারাদেশের মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথিত স্ত্রীর ছবি সম্বলিত পোস্ট শেয়ার করছে। কিন্তু তাহিরপুরে আমার কর্মী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তানকে এ কারণে মামলা দিয়ে জেল হাজতের ঘটনা নিন্দনীয়। শাল্লার যুবলীগ নেতা অপুকে হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা যারা দেশে ভাংচুর, হামলা করে দেশের ক্ষতি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। পুলিশ যাতে বিভ্রান্ত না হয়ে অযথা আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি না করে সেদিকে নজর রাখার আহ্বান জানিয়েছি।
জানা গেছে মাওলানা মামুন হকের হোটেল সোনারগাও কাণ্ডের ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন অরিন্দম চৌধুরী অপু। তার এই পোস্টের জের ধরে রুশেন আহমদ, এইচএম মাসুম বিল্লাহ, তারেক হাসান মুন্না, তারেক মিয়া, মেঘলা আকাশ, সাকিল আহমেদ, তালহা চৌধুরী তাহমিদ বেশ কয়েকজন অরিন্দম চৌধুরী অপুকে ফেইসবুকে হুমকি ধমকি দিয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয় আমাকে দিরাইয়ের শিক্ষকের বিষয়ে খোজ খবর রাখতে বলেছেন। তার নিরাপত্তায় আমরা সচেষ্ট আছি। কেউ যাতে ধর্মীয় গুজব সৃষ্টি অশান্তি সৃষ্টি না করতে পারে সেদিকে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!