হাওর ডেস্ক::
মহামারীর প্রকোপে বিশ্বের সব দেশেই এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে মাস্ক। যে হারে সংক্রমণ এবং মৃত্যু বেড়ে চলেছে গোটা বিশ্বে তাতে আগামী কয়েক বছর তো বটেই, সারা জীবনের জন্য মাস্ক অপরিহার্য হয়ে গেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কিন্তু কাপড়ের মাস্ক না সার্জিক্যাল মাস্ক, সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে কোনটা বেশি ভালো তা নিয়ে এখনো ধন্দ রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় বহু মানুষ আবার কাপড়ের মাস্কই বেছে নিচ্ছেন। সে কথা মাথায় রেখে কাপড়ের মাস্ক পরার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সম্প্রতি টুইটারে শেয়ার করা এক ভিডিওতে এ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, মহামারীর প্রকোপ থেকে বাঁচতে শুরু থেকেই মাস্ক এবং স্যানিটাইজারের ওপর জোর দিয়ে আসছে ডব্লিউএইচও। কাপড়ের মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রেও হাত পরিষ্কার রাখার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে তারা। বলা হয়েছে, পরা বা খোলা, যে কোনো সময় মাস্ক ছোঁয়ার আগে হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। মাস্কের কোথাও কোনো ছিদ্র বা ছেঁড়া রয়েছে কিনা, দেখে নিতে হবে ভালো করে। অনেক সময় দেখা যায়, মাস্ক পরার পর মুখের দুপাশে ফাঁক রয়েছে। তা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। মাস্ক পরার পর মুখ, নাক এবং থুতনি সম্পূর্ণভাবে ঢাকা থাকতেই হবে।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে গ্রীষ্মের দাবদাহে মাস্ক পরে অনেকেই হাঁপিয়ে ওঠেন। যে কারণে নিজের অজান্তেই মাস্কে হাত চলে যায়। টেনেটুনে মাস্ক আলগা করেন অনেকে। অস্বস্তি হলে ওপরের অংশ ধরে মাস্ক ঠিক করতেও দেখা যায় অনেককে। কিন্তু হু বলছে, ঘন ঘন মাস্ক না ছোঁয়াই ভালো। আর যদি মাস্ক খুলতে হয় বা ঠিক করতে হয়, তা কানের পাশে অথবা মাথার পিছন দিক থেকে মাস্কের বন্ধনী ধরেই খুলতে বা পরতে হবে। খোলার পরই মুখের কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে মাস্ক। সার্জিক্যাল মাস্কের ক্ষেত্রে একবার পরার পরই তা ফেলে দিতে হয়। তবে কাপড়ের মাস্ক পুনর্ব্যবহারযোগ্য বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। মাস্ক ভিজে না গেলে, নোংরা না হলে খোলার পর পরিষ্কার থলিতে রেখে দেওয়া যাবে। ফের ব্যবহার করতে চাইলে বন্ধনী ধরে থলি থেকে বের করে সাবান বা ডিটারজেন্টে ভিজিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। দিনে এক বার গরম পানিতে সাবান মিশিয়ে মাস্ক ধুয়ে নিলে ভালো হয়।
কাপড়ের মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে এর আগে ত্রিস্তরীয় মাস্কের ওপর গুরত্ব দিয়েছিল ডব্লিউএইচও। বলা হয়, দোকান থেকে কিনে বা বাড়িতে তৈরি করা মাস্ক পরা যাবে। তবে সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতা মাস্কের কাপড়ের উপর যেহেতু নির্ভর করে, তাই তিনটি স্তরে আলাদা রকমের কাপড় দিতে হবে। মাস্কের যে অংশটি ভেতরের দিকে থাকবে, তাতে সুতির কাপড় ব্যবহার করলে ভালো। কারণ তা মুখ থেকে নির্গত ড্রপলেটস দ্রুত শুষে নিতে পারে। মাঝের স্তরে থাকবে পলিপ্রোলাইনের মতো উপকরণ, যা ফিল্টারের কাজ করবে। বাইরের স্তরটি তৈরি হবে পলেস্টারের মতো উপকরণ দিয়ে, যা সংক্রমণ বাইরে ছড়াতে দেবে না বা বাইরে থেকেও সংক্রমণ মুখে প্রবেশ আটকাবে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।