ধর্মপাশা প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও সলপ গ্রামের বাসিন্দা ইকবাল মিয়ার (৬০) নেতৃৃত্বে তাঁর লোকজন একই গ্রামের বাসিন্দা স্বামী আবু চান (৭০), স্ত্রী আছিয়া খাতুন (৬০) ও ছেলে আমিরুল ইসলাম (২৫)কে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার (৩০এপ্রিল) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে দুজনকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মারধরে শিকার আবু চান বাদী হয়ে ওই ইউপি সদস্যসহ ছয়জনকে আসামি করে আজ শনিবার (১মে) বিকেলে ধর্মপাশা থানার ওসির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বেলা পৌনে পাঁচটার দিকে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের সলপ গ্রাম জামে মসজিদে আসরের নামাজ পড়তে যান একই গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য ইকবাল মিয়া , প্রতিবেশী আবু চান (৭০) ও আমিরুল ইসলাম (২৫। নামাজ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ইউপি সদস্য ইকবাল মিয়া মসজিদের বারান্দায় একই গ্রামের বাসিন্দা আমিরুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে বলেন যে, তোর মতো ছেলে বাধা নিষেধ করার কারণে আমাদের মসজিদের ঈমাম সাহেব তাবিজ ও পানি পড়া দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এ সময় আবুচান এ নিয়ে প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে ইকবাল ও আবু চানের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে আবু চানের দাড়ি ধরে টান দিয়ে ধরে গালে চড় মারেন ইউপি সদস্য ইকবাল। এ অবস্থায় মসজিদে আসরের নামাজ না পড়েই আবু চান ও আমিরুল নিজ বাড়িতে চলে আসেন। ওইদিন বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে ইউপি সদস্য ইকবালের নির্দেশে তাঁর ছেলে হিরণ মিয়া (৩২)মুক্তার হোসেন (২৮)সহ ৫/৬জন লাঠি সোটা ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আবু চান,তাঁর স্ত্রী আছিয়া খাতুন (৬০) ও ছেলে আমিরুল ইসলামকে মারধর শুরু করে এবং বসতঘর ভাঙচুর করে। আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ওই তিনজন প্রাণে রক্ষা পান। ওইদিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আহত ওই তিনজন চিকিৎসা নিতে নিজ বাড়ি থেকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশ্যে অটোরিকশা যোগে রওয়ানা হলে ওই তিনজনকে সলপ গ্রাম জামে মসজিদের সামনের সড়কে পেয়ে ইউপি সদস্য ইকবাল ও তাঁর লোকজন হামলা চালিয়ে আবারও মারধর করেন। পরে রাত ১১টার দিকে আহত ওই তিনজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। আহত তিনজনের মধ্যে আবু চান ও তাঁর স্ত্রী আছিয়া খাতুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন । আর তাঁদের ছেলে আমিরুল সাময়িক চিকিৎসা নিয়েছেন।
উপজেলা স্বা্স্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আহত আবু চান বলেন, আমাদের গ্রামে ইকবাল মেম্বর আমরার এলাকায় খুউব লাট্টিয়াল প্রকৃতির লোকজন। এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ও মারধরে শিকার হতে পারে এই আশঙ্কায় তাঁর অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। ইউপি সদস্য ইকবালের নির্দেশে ও নেতৃত্বে আমার স্ত্রীর হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড়িয়ে আহত করেছে এবং আমাদেরকে মারধর করাসহ বসতঘর ভাঙচুর করেছে। আমরা এ ঘটনায় থানার ওসির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।
সেলবরষ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন বলেন, আমাকে আবু চান ও তাঁর ছেলে দুজন মিলে মারধর করেছে। এ ঘটনা শুনে আমার ছেলে ও নাতিরা মিলে আবু চানের বাড়িতে গিয়ে কিছু কথা বার্তা বলেছে। কোনোরকম মারধরের ঘটনা ঘটেনি। আমাকে জড়িয়ে যাকিছু প্রচার করা হচ্ছে তা সঠিক নয়।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ চৌধুরী বলেন, এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।