লন্ডন প্রতিনিধি:
তিনি বৃটিশ লেবার পার্টির মনোনীত একজন প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন।
এই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর স্টুয়ার্ট বেলউডের মৃত্যুর পর কাউন্সিলর পদটি শূন্য হলে পুনঃনির্বাচন গত ৬ মে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিজয়ী হন সিলেটের মেয়ে পুষ্পিতা।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বেড়ে ওঠা পুষ্পিতার জন্মস্থান মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের করিমপুর চা বাগানে। তিনি খলগ্রাম করিমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এই বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণিতে তিনি মেধাবৃত্তি পেয়েছিলেন। খলগ্রাম করিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা জীবন শেষ করেন। সুনমাগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ থেকে বিএ সম্পন্ন করেন।
দুই সন্তানের মা পুষ্পিতা গুপ্ত করোনায় লকডাউনে কিংস জর্জ হাসপাতালের কর্মীদের জন্য খাবার প্রস্তুত ও সরবরাহ করেছেন। সম্প্রতি তিনি রেডব্রিজ কাউন্সিলের দাতব্য সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে গৃহহীন ও অভাবী লোকদের জন্য সপ্তাহে ১০০ গরম খাবার নিজ হাতে প্রস্তুত ও বিতরণ করেছেন।
তিনি বলেন, গৃহীনতার অবসান ঘটাতে হবে এবং এটি সমাধানে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে। ইলফোর্ড নর্থ শহরের হেইনল্ট ব্রাঞ্চ অ্যান্ড চেয়ার অব হেইনল্ট পুলিস ওয়ার্ডে একজন নারী কর্মকর্তা হিসেবেও কাজ করছি। যা থেকে আমি স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা ও তাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারছি। একজন সমাজকর্মী হিসেবে বিভিন্ন সময়ে আমি সমাজের সম্প্রদায় এবং প্রতিনিধিদের মাঝে সমন্বয় সাধনসহ অপরাধমূলক ও সমাজবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নির্মুলের প্রচেষ্টা করে যাচ্ছি।
পুষ্পিতা পূর্ব লন্ডন ও রেডব্রিজের প্রতিটি নির্বাচনেই লেবার পার্টির জন্য প্রচার চালিয়েছেন। স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলর, নেতাকর্মী এবং স্থানীয়ভাবে পার্টিতে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণে নারীদের উৎসাহিত করার জন্য তিনটি সফল আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে নারী অগ্রগতিতে তহবিল সংগ্রহে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ধারাবাহিকভাবে মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চান। তার অর্জিত দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সেভেন কিংসের লোকদের জীবনমানের উন্নতি ভূমিকা রাখবে বলেই প্রত্যাশা তার।
রমেন্দ্র নারায়ণ সোম ও যুথিকা সোম জুঁই দম্পতির ৫ মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের মধ্যে পুষ্পিতা সবার ছোট। তার বড় ভাই কানাডা প্রবাসী সুদীপ সোম রিংকু ও কানাডার মূল ধারার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
উল্লেখ্য, সিলেটের পুষ্পিতা গুপ্ত সেক্যুলার বাংলাদেশ মুভমেন্ট, যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বহুমুখী কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত। নিজ পেশার পাশাপাশি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য কাজ করেন তিনি। এজন্য সেখানকার একটি স্কুলের ডেপুটি ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সেখানে কাজ করতে গিয়ে পুষ্পিতা সমাজে শিশুরা সমাজ ও পরিবারে যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় তা বেশ দারুণভাবে উপলব্ধি করছেন। এই কাজে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তিনি বুঝতে সক্ষম হয়েছেন যে, কীভাবে পরামর্শের মাধ্যমে পরিবারে পিতা-মাতাদের অনেক সমস্যা সমাধান সম্ভব।