হাওর ডেস্ক::
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে এক নারী হাফেজকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগে আল আমিন বিন আমজাদ নামে কওমী মাদ্রাসার এক মোহতামিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ফুলবাড়ী থানায় আল আমিনসহ দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার অন্য আসামি হলেন, স্থানীয় ওই মাদ্রাসাটির পরিচালক ও পৌরবাজারের জুতাপট্টি এলাকার মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে আলী আল রেজা (৩৮)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ওই নারী মাদ্রাসাটিতে চাকরিতে যোগদানের সময় থেকেই আল আমিন বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেন। আল আমিন বিবাহিত জেনে তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন ওই নারী। এরপরও ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে শারীরিক সম্পর্কের চেষ্টা করেন আল আমিন। তিনি মামলার অপর আসামি আলী আল রেজার সহায়তায় গত ৩ মার্চ বিবাহ বিষয়ক একটি হলফনামা তৈরি করে সেখানে ওই নারী হাফেজের স্বাক্ষর নেন এবং জানান আল আমিন ও ওই হাফেজা পরস্পর স্বামী-স্ত্রী।
এজাহারে আরও বলা হয়, গত ৩ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায় ওই মাদ্রাসার অফিস কক্ষে ওই হাফেজার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন আল আমিন। এরপর থেকে সুযোগ মতো মাদ্রাসার অফিস কক্ষসহ অন্যান্য স্থানে ওই হাফেজার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। ওই হাফেজা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে আল আমিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার পরিবারে স্ত্রী হিসেবে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান। আল আমিন গত ৭ জুন ওই হাফেজাকে তার (আল আমিন) বাড়িতে নিয়ে তাদের বিয়ের বিষয়ে আলোচনা করেন। সেখানেও স্বামী-স্ত্রী হিসেবে শারীরিক সম্পর্ক করেন এবং পরদিন হাফেজাকে তার বাবার বাড়িতে রেখে আসেন।
মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, কিছুদিন পর ওই নারী অন্তঃসত্ত্বার লক্ষণের বিষয়টি আল আমিনকে জানালে গত ৮ জুলাই সন্ধ্যায় ওই নারীকে জোরপূর্বক ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করান। পরে ওই নারী আনুষ্ঠানিকভাবে স্ত্রী হিসেবে আল আমিনকে তার বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু শিক্ষক আল আমিন বিভিন্ন অজুহাতে সময় ক্ষেপণ করেন। এ ছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষক আল আমিন ওই হাফেজাকে মুঠোফোনে জানান, তিনি তাকে বিয়ে করবেন না। শারীরিক সম্পর্ক করতে বিয়ের নাটক করেছেন।
ভুক্তভোগী জানান, শারীরিক সম্পর্কের সময় ভিডিওচিত্র ধারণ করেন আল আমিন। ভিডিওচিত্র দিয়ে তাকে হুমকি ও অনলাইনে তা ছড়িয়ে দেওয়ারও ভয় দেখান।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারী গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টায় বাদী হয়ে আল আমিন বিন আমজাদ ও আলী আল রেজার বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর গত বৃহস্পতিবার রাতে আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’