স্টাফ রিপোর্টার ::
ফসলহারা কৃষকের সহায়তায় সরকারি ভিজিএফ কার্ড বণ্টনে নানা দুর্নীতি হলেও এখন পর্যন্ত দুর্নীতির প্রতিকার নেই। নেওয়া হয়নি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। অথচ দ্বিতীয় কিস্তির চাল ও টাকা উত্তোলনের সময় এসে গেছে। সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতার কারণে দুর্নীতিবাজরা পার পেয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে হাওর বাচাও সুনামগঞ্জ বাচাও আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন। তারা অবিলম্বে দুর্নীতিবাজ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
জানা গেছে, সরকার হাওরের দুর্গত দেড় লাখ কৃষকের জন্য ১০০দিনের বিশেষ ভিজিএফ (জনপ্রতি ৩০ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা) প্রদান করছে গত মাস থেকে। অভিযোগ রয়েছে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের বাদ দিয়ে অনেক চেয়ারম্যান-মেম্বাররা নিজের পছন্দের লোকজনসহ আত্মীয়-স্বজনদের একাধিক কার্ড প্রদান করেছেন। বিভিন্ন স্থানে তালিকায় নাম উঠাতে টাকাও নেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বরাবরে একাধিক অভিযোগ হয়েছে। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সুধী সম্মেলনে বক্তারা ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। সংগঠন ‘হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন’ মানববন্ধন-সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। পরে সংগঠনটি জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন ত্রাণ দুর্নীতির প্রতিবাদে জেলা-উপজেলায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে।
জানা গেছে, সদর উপজেলার কাঠইর, মোহনপুর, গৌরারং ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ত্রাণ দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আবেদনও করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাননি বঞ্চিত লোকজন। তবে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটি বিভিন্ন স্থানে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে বলে ওই সূত্র জানায়।
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন-এর সদস্যসচিব বিন্দু তালুকদার বলেন, ফসলহারা নিঃস্ব কৃষকের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বরাদ্দ বণ্টনে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। আমরা সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পর লিখিতভাবে অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছি। ফসলহারা কৃষকদের নিয়ে রাজপথে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছি। এখন পর্যন্ত প্রতিকারের কোন খবর পাইনি আমরা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, জুন মাসের বিশেষ ভিজিএফ বরাদ্দ চলতি সপ্তাহেই বণ্টন হবে। আগামী মাসেই এই প্যাকেজ শেষ হবে। তবে বিভিন্ন স্থানে অনিয়মের তদন্ত চলছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ব্যবস্থাও নিচ্ছে বলে তিনি জানান।