হাওর ডেস্ক::
মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলের এক জঙ্গলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সংঘের্ষের পর সেখান থেকে অন্তত ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের শরীরে নির্যাতনের আলামত পাওয়া গেছে বলে ওই মিলিশিয়া গোষ্ঠীর এক সদস্য এবং দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশটির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে সেনাবাহিনীর সহিংস দমনে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া হালকা অস্ত্রে সজ্জিত স্থানীয় মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গেও সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে হতাহত হয়েছে।
সামরিক শাসনের বিরোধিতায় মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো জোট বাধার পর সম্প্রতি মিয়ানমারের স্যাগাইং শহরের কানি এলাকায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। কানির বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের পর অন্তত ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স মরদেহ উদ্ধারের তথ্য নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে। একই সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্রের মন্তব্য জানতে টেলিফোন করলেও কোনও সাড়া পায়নি রয়টার্স।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কানি মিলিশিয়া গোষ্ঠীর একজন সদস্য বলেছেন, বর্তমানে ওই এলাকায় লড়াই কার্যত বন্ধ আছে। তবে আরও মরদেহ পাওয়া যাবে কি-না সেটি এখনও পরিষ্কার নয়।
প্রতিশোধমূলক হত্যা ও লুটপাটের জন্য মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং জান্তাপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী অপর একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠীকে দায়ী করে তিনি বলেন, প্রত্যন্ত এলাকার অনেক গ্রামবাসী পার্শ্ববর্তী শহরে পালিয়ে গেছেন।
থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের স্থানীয় দৈনিক দ্য ইরাবতি বলছে, গত ৩০ জুলাই কানির জঙ্গলে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরসহ ১২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের সবার শরীরে ভারী আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এর আগে, জুলাইয়ের শুরুর দিকে কানির পাশের আরেকটি গ্রাম থেকে আরও ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে অন্যান্য এলাকা থেকেও আরও ১২ জনের মরদেহ উদ্ধার হয় বলে জানিয়েছে দ্য ইরাবতি। গত মাসে সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলিশিয়াদের সংঘর্ষের পর অন্তত সাতজনের মরদেহ উদ্ধার ও মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো আরও মরদেহের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য মিয়ানমার নাউ বলেছে, সর্বশেষ যেসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে; সেগুলো একটি পুড়ে যাওয়া কুঁড়ে ঘরের নিচে চাদরে ঢাকা ছিল এবং বেশিরভাগই পচে যেতে শুরু করেছিল।
থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিস্টেন্ট এসোসিয়েশন অফ পলিটিক্যাল প্রিজনার্স বলেছে, সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৯৪৬ জনকে হত্যা করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। তবে মিয়ানমারের জান্তা প্রাণহানির এই সংখ্যা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্যও মারা গেছেন।