হাওর ডেস্ক::
বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান ‘জয়বাংলা’ নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে অবশেষে যুবলীগ থেকে বাদ পড়লেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জয় বাংলা স্লোগান নিয়ে কটাক্ষ করায় ও সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় তাকে যুবলীগের আইন সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’কে কটাক্ষ করে ফেসবুক লাইভে আসায় ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয় যুবলীগ। একইসঙ্গে সুমনের ফেসবুক লাইভের বক্তব্য খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যুবলীগকে নিদের্শনা দেয় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। পরে বিষয়টি যুবলীগের ‘টাইব্যুনালে’ পর্যালোচনা করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১০ মার্চ বিচারপতি নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ‘জয় বাংলা’কে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান স্বীকৃতি দেন।
তখন সংগঠনের একাধিক নেতা জানিয়েছিলেন, ‘সংগঠনের কেউ অপরাধ করলে যুবলীগের টাইব্যুনালে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হয়।’ ব্যারিস্টার সুমনকে বহিষ্কারের চিঠি পাঠানো হবে জানিয়ে এ সময় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল জানান, ‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান। এই স্লোগানের মাধ্যমেই বাঙালি জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা এনেছিল। জয় বাংলা স্লোগানকে কটাক্ষ করায় আমরা সংগঠনের আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা নেবো।
সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার ওসি আক্তার হোসেনের সমালোচনা করতে গিয়ে আলোচিত-সমালোচিত আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন গত শুক্রবার নিজ ফেসবুক থেকে লাইভে আসেন।
সুমন বলেন, ‘আপনারা জানেন যে গতকালকে (৫ আগস্ট) শেখ কামাল সাহেবের জন্মদিনে শরীয়তপুরের পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেনের আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগান দেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই জিনিসটা দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছে দু-একটা কথা বলা দরকার। সুমন বলেন, ‘আপনারা একটা জিনিস খেয়াল করে দেখেন যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্লোগান দেয়ার মানুষ কী এতই কম যে একজন ওসি সাহেবের এই স্লোগান দিতে হবে।’
আওয়ামী যুবলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের এই লাইভ ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে সমালোচনা’র সৃষ্টি হয়। অনেকেই এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ব্যাকগ্রাউ- না দেখে দলীয় নেতা বানালে যা হয়, সুমনের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। যুবলীগের মতো ঐতিহ্যবাহী একটি সংগঠনের আইন সম্পাদক হলেও দলের পক্ষে কোনদিন তাকে অবস্থান নিতে দেখা যায়নি। বরং বার বার আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছেন সরকার বিরোধী ফেসবুক লাইভে এসে।
২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর আওয়ামী যুবলীগের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। ওই কমিটিতে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে আইন বিষয়ক সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছিল।