হাওর ডেস্ক::
রাজধানী কাবুলসহ পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিল তালেবান। বিদেশি সেনাসহ আগের সরকারের সঙ্গে কাজ করা আফগানদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধ নেওয়া বা সহিংসতা হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল গোষ্ঠীটি। তবে তালেবান তাদের এই প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালন করছে না বলে জাতিসংঘের একটি নথিতে জানানো হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান যুদ্ধের সময় ন্যাটো বাহিনীর হয়ে অথবা সাবেক আফগান সরকারের হয়ে কাজ করতেন, এমন ব্যক্তিদের সন্ধানে তল্লাশি তৎপরতা জোরদার করেছে তালেবান। গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা রাজধানী কাবুলের প্রতিটি বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছেন। এমনকি টার্গেটকৃত ব্যক্তির পরিবারকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে নথিতে জানানো হয়েছে।
আর এই কারণে প্রতিশোধপরায়ন না হওয়ার ব্যাপারে তালেবান বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও মানুষ তাতে আস্থা রাখতে পারছে না। ফলে দেশটিতে এখনও আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে।
নরওয়েজিয়ান সেন্টার ফর গ্লোবাল অ্যানালাইসিস (রিপটো) নামক প্রতিষ্ঠানের একটি গোপন দলিলে ‘আফগান সহায়তাকারীদেরকে’ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার এই তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটি জাতিসংঘকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করে থাকে।
সংস্থাটির প্রধান ক্রিশ্চিয়ান নিলম্যান বিবিসি’কে বলেন, ‘আফগানিস্তানে এখন বহুসংখ্যক মানুষ তালেবানের লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এবং তাদের হুমকির বিষয়টি একদমই পরিষ্কার।’
তিনি আরও বলছেন, ‘রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, লক্ষবস্তুতে পরিণত হওয়া ব্যক্তিরা আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত ভুক্তভোগী ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদেরকে আটক করে শাস্তি দিতে থাকবে তালেবান।’
তার ভাষায়, তালেবানের ব্ল্যাকলিস্টে থাকা যেকোনো ব্যক্তিই এখন চরম বিপদের সম্মুখীন এবং সেখানে এমনকি গণহত্যাও সংঘটিত হতে পারে।’
এদিকে আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি শহরে এরইমধ্যে তালেবানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। রাজধানী কাবুলে বিক্ষোভকারীরা জাতীয় পতাকা উড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। অন্যদিকে আসাদাবাদে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
কাবুল থেকে ছেড়ে আসা মার্কিন বিমান থেকে পড়ে যারা মারা গেছেন, তাদের একজনের নাম জাকি আনোয়ার। ১৯ বছর বয়সী এই তরুণ আফগানিস্তানের জাতীয় যুব ফুটবল দলের হয়ে খেলতেন।
বিদেশী শক্তিধর দেশগুলো তাদের নাগরিকদের আফগানিস্তান থেকে বের করে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে তারা ১৪ আগস্টের পর থেকে ৭ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে।