বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সুভাষ চন্দ্র সরকার (৬৩) পিটানো শরিরের এক পুরুষ। শারিরিকভাবে খুবই সামর্থ্যবান এই মানুষটি গত এক বছর ধরে অস্বাভাবিক জীবন যাপন করতেন। কারো সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। তবে সুযোগে তিনি পুত্রবধু, আপ্ন ভাগ্নিসহ নিকটাতœীয় নারীদের উপর আক্রমণ করে বিকৃত য্যৌনাচারে মেতে ওঠতেন। পরিবারের নিকটাতœীয় একাধিক নারী তার বিকৃত আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় অতীষ্ট হয়ে স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধু মিলে তাকে হত্যা করেছেন স্বজনরা। হত্যাকা-ে জড়িত স্বজনরা ঘটনা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
২১ আগস্ট শনিবার রাতে ক্লুলেস এই মামলার তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থানা পুলিশ অফিসিয়াল আইডি থেকে প্রকাশ করেছে। মধ্যনগর উপজেলার ফারুকনগর গ্রামের সুভাষচন্দ্র সরকার (৬৩) বছর বয়সী ওই ব্যক্তি বিকৃত যৌনাচারে আসক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাড়ির পাশের মনাই নদীতে তার হাত পা বেঁধে ফেলে দিয়েছিলেন স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধু। বুধবার তার লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মধ্যনগর থানার ওসি নির্মল দেব জানান, সুভাষ চন্দ্র সরকার এই বয়সেও ছিলেন শারিকিভাবে খুবই সামর্থ্যবান পুরুস। এই বয়সেও তিনি বিকৃত ও অবাধ যৌনতায় আসক্ত ছিলেন। জোরপূর্বক তিনি পুত্রবধু, আপন ভাগ্নিসহ নিকটাতœীয় নারীদের অমানবিকভাবে যৌন হয়রানি করেছেন। তার বিকৃত যৌনাচার থেকে রেহাই পাননি পরিবারের নিকটাতœীয় নারীরা। তিনি বলেন, নারীলোভী সুভাষের এমন কা- দিন দিন মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কারো সঙ্গে এসব বিষয় শেয়ারও করতে পারছিলেননা পরিবারের লোকজন। তাকে শত চেষ্টা করেও এই পথ থেকে ফেরাতে পারেননি। তাই সুভাষ সরকারের স্ত্রী আরতী রানী সরকার (৫২), ছেলে সুজিতচন্দ্র সরকার (৩২) ও পুত্রবধু খেলা রানী সরকার (২৮) তাকে হত্যার পরিকল্পনা নেন। ওসি আরো জানান, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে অতীষ্ট স্বজনরা গত ১৮ আগস্ট রাতে সুভাষ বাড়ির পূর্বপাশে একটি নৌকায় ঘুমিয়ে থাকার সময় হত্যা করেন। এ সময় স্ত্রী, ছেলে ও পুত্রবধু রশি দিয়ে তার পা বেঁধে ফেলেন এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেন। পরে স্থানীয়দের নিয়ে ছেলে সুজিত বাবাকে খোঁজার নাটক করেন। এক পর্যায়ে মরদেহ নদী থেকে তুলে পুলিশকে খবর দেন। এ ঘটনায় সুভাষ সরকারের মেয়ে নিভা রাণী সরকার মধ্যনগর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন বলে জানান ওসি নির্মল দেব।
ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার সুজনচন্দ্র সরকার জানান, খবর আমি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে সুভাষের হাত পা বাধা মরদেহ উদ্ধার করেছিলাম। পরদিন জিজ্ঞাসাবাদে সুভাষের স্ত্রী, ছেলে ও পুত্রবধু সুভাষকে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। গত শুক্রবার সুনামগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। যৌনতায় আসক্ত সুভাষ সরকারের কবল থেকে পরিবারের নারীরাও রেহাই পাননি। তাই তারা এই হত্যাকা- ঘটিয়েছেন।
মধ্যনগর থানার ওসি নির্মল দেব বলেন, আমরা মরদেহ উদ্ধারের পরই সন্দেহভাজনদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলি। প্রথমে একজন স্বীকার করেন। পরে অন্যরাও স্বীকার করেন। এ ঘটনায় প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।