হাওর ডেস্ক ::
আলোচিত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় মুঠোফোনে কথা বলেছিলেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। এ ঘটনায় আদালতে দায়িত্বে অবহেলার কারণে এক এসটিআইসহ চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাসানুজ্জামান পিপিএম। তিনি বলেন, এসটিআই শাহাব উদ্দিনসহ তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন মো. রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে, আজ সকালে মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর আগেই আদালতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান পিপিএম জানান, আদালতের নিরাপত্তা বিবেচনায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় আদালত পাড়ায়।
এর আগে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। কীভাবে ভাইকে হত্যা করা হয়, সেই বর্ণনা আদালতে উপস্থাপন করছিলেন তিনি। বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তখন ১৫ আসামি। তাদের মধ্যে ছিলেন-সিনহা মো. রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি এই প্রদীপ কুমার দাশ।
গত সোমবার কক্সবাজার জেলার দায়রা জজ আদালতে মামলার প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে শুনানির সময় কাঠগড়ায় বসে মোবাইল ফোনে কথা বলেন ওসি প্রদীপ। এ কথা বলার একটা ছবি এর মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে তোলপাড় চলছে।
ছবিতে দেখা গেছে, আদালত কক্ষের কাঠগড়ার ভেতরে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন প্রদীপ। হাতে থাকা মুঠোফোনে কারও সঙ্গে তিনি কথা বলছিলেন। ঘটনার সময় কয়েকজন ব্যক্তি তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় সোমবার। বুধবার পর্যন্ত টানা তিনদিন এ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে। মামলায় মোট ৮৩ সাক্ষীর মধ্যে বাদীসহ ১ থেকে ১৫ নম্বর সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। মামলার বাদী নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসের সাক্ষ্য দিয়ে প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মঙ্গলবার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন সাহিদুল ইসলাম সিফাত।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টের গাড়ি তল্লাশি কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব ১৫-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম।