হাওর ডেস্ক::
ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় লাজ প্রদেশের একটি সামরিক ঘাঁটিতে বিস্ফোরক ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে হুথি বিদ্রোহীরা। এ ঘটনায় অন্তত ৩০ জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ৬০ জন।
হতাহতরা সবাই সৌদি-আমিরাত নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের সদস্য। ইয়েমেনের সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় শাখা মুখপাত্র মোহাম্মদ আল নাকীব বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রবিবার লাজ প্রদেশের আল আনাদ এলাকার সামরিক ঘাঁটিতে এই হামলা হয়েছে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর এডেন থেকে আল আনাদের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার।
আল-আনাদের ওই সামরিক ঘাঁটির নিহত ও আহত সেনারা অধিকাংশই সৌদি সেনাবাহিনীর সদস্য এবং নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন নাকীব। হামলায় কোনো বেসামরিক সদস্য হতাহত হয়েছেন কি না তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গত ৭ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত ও বিপর্যস্ত ইয়েমেনে অস্থিরতার সূত্রপাত হয় ২০১৪ সালে, যখন দেশটির আব্দ-রাব্বু মানসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে রাজধানী সানা দখল করে নেয় হুথি বিদ্রোহীরা।
হাদির সরকারকে ফের ক্ষমতাসীন করতে ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ইয়েমেনে অভিযান শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সৌদি-ইয়েমেন-আমিরাত সামরিক জোট।
কিন্তু এই অভিযানের শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসান হওয়ার পরিবর্তে তা আরও তীব্রতর হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় আছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভর করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা।
গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং একদা স্বচ্ছল এই দেশটি। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ খাদ্য ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের গুরুতর সংকটে ভুগছেন।
তবে এবারের হামলা এমন সময়ে হলো, যখন জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে যুদ্ধবিরতি ও শান্তিস্থাপনের জন্য হুথি বিদ্রোহীগোষ্ঠী এবং ইয়েমেনের সরকারের মধ্যে শান্তি সংলাপ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।