হাওর ডেস্ক::
শুল্ক ছাড়ের সুবিধায় আমদানি করা চাল দেশের বাজারে এলেও এর প্রভাব পড়েনি খুচরায়; এখনও ঊর্ধ্বমুখী দাম কমতে শুরু করেনি।
ঢাকার পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, শুল্ক কমানো ও আমদানি শুরুর খবরে গত ২০ অগাস্টের পর চালের দাম কিছুটা কমতে শুরু করলেও এই প্রবণতা এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়নি। একটি নির্দিষ্ট দরেই ঘুরপাক খাচ্ছে বাজার।
উল্টো গত এক সপ্তাহে মাঝারি আকারের চাল কেজিতে ৩ টাকা করে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন বিক্রেতা।
চালের দামের ওঠানামার কারণে বাজার কোন দিকে মোড় নেবে তা বুঝতে অনেক বিক্রেতা মজুদ কমিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
সরু চালের দাম ৬০ টাকার ওপরে এবং মোটা চালের দাম ৫০ টাকার উপরে উঠে যাওয়ার পর গত মাসে চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির পথ সুগম করে সরকার।
নতুন শুল্ক সুবিধায় ভারত থেকে আমদানি করা চাল অগাস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে দেশের বাজারে ঢুকতেও শুরু করেছে।
শুক্রবার রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, চাল ছাড়াও অ্যাংকর ও মসুর ডাল এবং চিনির বাজার বেশ চড়া। দুই মাস আগে থেকেই রেকর্ড সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেল। রান্নায় বহুল ব্যবহৃত এই তেলের দাম এখনও কমেনি।
শুক্রবার মিরপুর পীরেরবাগ বাজারের দোকানি ফেরদৌস হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, চলতি সপ্তাহে বিআর আটাশ প্রতিকেজি ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৩০০/২৪০০ টাকায়। পাইজাম ২৩০০ টাকা, মিনিকেটের বস্তা ২৮০০ থেকে ২৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে সরু চাল নাজিরের ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ টাকায় অর্থ্যাৎ প্রতিকেজি চালের দাম পড়ছে ৬০ টাকা।
এক মাস আগে এই দোকানে গুটি স্বর্ণা, পাইজাম ও বিআর আটাশ ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। মিনিকেট মানভেদে ৬০ টাকা থেকে ৬৪ টাকা, কাটারি মিনিকেট ৬৫ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছিল বলে জানান এই দোকানি।
কারওয়ান বাজারের দোকানিরা জানান, ভারতীয় চাল আসার খবরে কিছুদিন আগে অন্যান্য চালের সঙ্গে বিআর আটাশ চালের দামও কমছিল। এখন আবার বস্তায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দাম বেড়ে ২৩৫০ টাকা হয়েছে।
এখন মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫৬ টাকা থেকে ৫৮ টাকায়, ৫০ কেজির বস্তা ২৯০০ টাকা। পাইজাম চালের বস্তা ২৩০০ টাকা এবং খুচরায় প্রতিকেজির দাম ৪৫ টাকা থেকে ৪৮ টাকার মধ্যে।
বাজারে স্বল্প পরিসরে ভারতীয় গুটি স্বর্ণা চাল পাওয়া যাচ্ছে। ৫০ কেজির বস্তার দাম ২২৫০ টাকা এবং মিনিকেটের বস্তা ২৭০০ টাকার মধ্যে রয়েছে। অর্থাৎ ভারতীয় মিনিকেট প্রতিকেজি ৫৪ টাকা থেকে ৫৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে চাল আমদানি জোরদার করতে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে এলসি খোলার সময়সীমা আরেক দফায় বাড়িয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
অগাস্টের মাঝামাঝিতে যেসব কোম্পানিকে চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল সেগুলোকে অনুমোদন পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এলসি খুলতে বলা হয়েছিল। এখন ১ সেপ্টেম্বরের প্রজ্ঞাপনে এলসি খোলার সময়সীমা ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে বাজারে নতুন করে চিনি ও ডালের দাম বাড়তে শুরু করেছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। মহামারীর প্রভাবে বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এসব ভোগ্য পণ্যের দাম বাড়ছে বলে গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এক সভা শেষে জানানো হয়।
শুক্রবার খুচরা বাজারে বড় দানার মসুর ডাল প্রতিকেজি ৮৫ টাকা, চিনি কেজিপ্রতি ৭৮ টাকা, সয়াবিন তেল কেজিপ্রতি ১৩৮ টাকা এবং পাম তেল কেজিপ্রতি ১৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কারওয়ান বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের দাম ছিল প্রতিলিটার ১২৭ টাকা, পাম তেল প্রতিলিটার ১১২টাকা।
এই বাজারে বড় দানার মসুর ডাল দুইদিন ধরে প্রতিকেজি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান মুদি দোকানিরা।
টিসিবির হিসাবে গত এক সপ্তাহে বড় দানার মসুর ডালের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশ।