স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ-সিলেট এর অকাল প্রয়াত যুব রাজনীতিবিদ মইনুদ্দিন আহমদ জালালের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরিতে স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন নারী নেত্রী শীলা রায়।
জেলা সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনাম আহমেদ’র পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ পরিমল কান্তি দে, কমরেড বরুণ রায় স্মৃতি সংসদের সভাপতি ধূর্জটি কুমার বসু, জেলা সিপিবি’র সভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার, লেখক সুখেন্দু সেন, প্রগতিশীল লেখক সংঘের সভাপতি রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল রজতকান্তি সোম, বিটিভির জেলা প্রতিনিধি অ্যাড. আইনুল ইসলাম বাবলু, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি পঙ্কজ কান্তি দে, দৈনিক সুনামকন্ঠের সম্পাদক বিজন সেন রায়, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি বোরহান উদ্দিন দোলন, জেলা যুব ইউনিয়নের সভাপতি মো. আবু তাহের।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিককর্মী অঞ্জন চৌধুরী, অ্যাড. প্রসেনজিৎ দে, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক জিএস মোজাম্মেল হক মুনিম, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক অ্যাড. খলিল রহমান, জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহসভাপতি শামস শামিম, সাবেক যুবনেতা হাজী হেলাল, অ্যাড. অরুনাভ দাস সন্দিপ, জেলা উদীচীর সহ সভাপতি সঞ্চিতা চৌধুরী, শিক্ষক কানিজ সুলতানা, সংস্কৃতিকর্মী আরতি পাল, যুবনেতা নাজমুল ইসলাম পলাশ, চাকুরীজীবী টিটু রায়, ব্যবসায়ী বাঁধন দত্ত, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নরেন ভট্টাচার্য প্রমুখ।
স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, মইনুদ্দিন আহমদ জালাল ব্যক্তি ও পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন না কখনও। তাঁর সবকিছু ছিলো সর্বজনীন। তিনি ছিলেন একজন উত্তম সংগঠক। সমাজপ্রগতির সংগ্রামকে আদর্শ হিসেবে দীক্ষা নিয়েছিলেন কৈশোর থেকেই। অসীম সাহসে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো এক বিরল যুবরাজনীতিবিদ তিনি। চিরযৌবনের সারথিদের যুথবদ্ধ করে কর্মসৃজন করেছেন বিশ্ব-মানবিকতার। কখনো একা হলেও দানবের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে এতটুকু দ্বিধা করেননি। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৮৩ সালে একমাস কারাভোগ করেন। স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র সাথে হয়ে কাজ করেছেন। বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন ১৯৯৭ সালে মৌলভীবাজারের মাগুরছড়ায় গ্যাস পুড়িয়ে ধ্বংস করার প্রতিবাদে আন্দোলন, ২০০২-২০০৩ সালে গ্যাস রফতানী করার প্রতিবাদে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র রক্ষার আন্দোলন, ২০০৫ সালে টেংরাটিলা গ্যাস বহুজাতিক কোম্পানি কর্তৃক পোড়ানো, জাতীয় স্বার্থবিরোধী ২০০৫ সালে ফুলবাড়ি কয়লা খনি থেকে উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্দোলন, ২০১৩ সালে সুন্দরবন রক্ষার প্রতিবাদসহ প্রতিটি গণ ও ন্যায্য সংগ্রামে তিনি নানাভাবে সক্রিয় ছিলেন। শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকা- পৃষ্টপোষকতা ও জড়িত থেকে কাজ করেছেন। বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন’র প্রতিনিধি হিসেবে প্রায় ৩২টি দেশে প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং বিশ্বের প্রায় ৬২টির মতো দেশ ভ্রমণ করেছেন।
বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা সাহসী, বিনয়ী, সমাজবিপ্লবী মইনুদ্দিন আহমদ জালাল ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত রাজনীতিক। বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের প্রাক্তন প্রেসিডিয়াম সদস্য, সিলেট জেলা সংসদের সাবেক সভাপতি মইনুদ্দিন জালাল সুনামগঞ্জ-সিলেটসহ কেন্দ্রীয়ভাবে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও যুব ইউনিয়নের সংগঠক ছিলেন।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও শোষণ-বঞ্চনামুক্ত রাষ্ট্র বিনির্মাণের সমাজবিপ্লবী মইনুদ্দিন আহমদ জালাল ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন।