স্টাফ রিপোর্টার::
‘পরিযায়ী পাখির মূল আবাসস্থল হচ্ছে সুনামগঞ্জের হাওর-বাওড়। শীত মওসুমে টাঙ্গুয়ার হাওরসহ বিভিন্ন হাওরে প্রচুর অতিথি পাখি আসে। এই অতিথি পাখির কারণেই টাঙ্গুয়া তথা সুনামগঞ্জের নাম সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে। এ কারণে জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো টাঙ্গুয়ার হাওরকে ১০৩১ তম রামসার সাইট ঘোষণা করেছে। বিশ্বঐতিহ্য স্বীকৃত এই হাওরের পরিযায়ী পাখিসহ বন্যপ্রাণী এখন হুমকিতে পড়েছে। যেখানে আগে লাখো অতিথি পাখি প্রতি বছর শীতে আসতো সেখানে গত বছর মাত্র ২৫ হাজার অতিথি পাখি এসেছে। এই পাখি আসা ২০ হাজারের নিচে নেমে গেলে ইউনেস্কো টাঙ্গুয়ার নাম কেটে দেবে। তাই পাখি নিধন বন্ধ ও বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে না পারলে টাঙ্গুয়ার নাম বিশ্ব ঐতিহ্য থেকে মুছে যাবে।’
‘আমরাই পারি বন্যপ্রাণী বাঁচাতে’ এই প্রতিপাদ্যে সুনামগঞ্জে পরিযায়ী পাখি ও বন্যপ্রাণী বিষয়ক জনসচেতনতামূলক সভায় এসব কথা বলেন, বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ঢাকার পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল সাদিক। ২৪ অক্টোবর রবিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ বন বিভাগের মল্লিকপুরস্থ নার্সারিতে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজন উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, যে কারণে টাঙ্গুয়ার হাওরের সুনাম তা হলো পরিযায়ী পাখি। সারা বিশ্বের প্রতিটি মানুষ এ কারণে টাঙ্গুয়ার হাওরকে চিনে। টাঙ্গুয়ার হাওর দেখতে শীতকালে প্রচুর বিদেশি পর্যটক আসে। কিন্তু আন্তর্জাতিক রামসার সাইট খ্যাত কোন এলাকায় যখন ২০ হাজারের মতো পাখি দেখা যায় তখনই জাতিসংঘের ইউনেস্কো সেটিকে রামসাইর সাইট ঘোষণা করে। তিনি বলেন, পাখি শিকারীদের আগ্রাসনের কারণে গত বছর মাত্র ২৫ হাজার পরিযায়ী পাখি এসেছিল। এই পাখি আসা যেভাবে কমছে তা যদি ২০ হাজারের নিচে কমে আসে তাহলে টাঙ্গুয়ার হাওরের নাম ইউনেস্কো মুছে দেবে। তাই সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের সুনাম মুছে যাবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা আরো বলেন, তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরের এলাকার প্রায় ১০ ভাগ মানুষ অতিথি পাখি শিকার করে। ৯০ ভাগ মানুষ সেই পাখি খায়। এ কারণে হাওরে অতিথি পাখি আসা কমে গেছে। বক্তারা বলেন, শুধু ইউনেস্কো থেকে টাঙ্গুয়ার নামই কাটা যাবেনা অতিথি পাখি না আসলে হাওরের তলদেশ শ্যাওলায় ভরে যাবে। পানিতে অক্সিজেন থাকবেনা। পাখি না আসলে মাছের পুষ্টিকর খাদ্য পাখির মলের অভাবে মাছ পুষ্টিকর হবেনা। তাই পরিযায়ী পাখিন নিধন বন্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। গোপনে পাখি শিকারীদের তথ্য বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট বা সরকারি হটলাইন নম্বরে জানানোর জন্য এলাকাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ বন বিভাগের চয়নব্রত চৌধুরী, সুনামগঞ্জ বন বিভাগের কর্মকর্তা অরুণ বরণ চৌধুরী, ফরেস্টার হাফিজুর রহমান, সাংবাদিক শামস শামীম প্রমুখ।