হাওর ডেস্ক::
দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নে জলমহালকে কেন্দ্র করে গ্রামের দুইপক্ষের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় শিরু মিয়া তালুকদার নিহতের প্রায় ২৫ দিন পর দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়াসহ ৫০ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দিরাই থানায় মামলাটি রুজু করা হয়। মামলা নং ০৫।
আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নিহতের ভাতিজা মো. শরিফের আবেদনের প্রেক্ষিতে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুর রহিম নালিশা বর্ণিত অভিযোগটি এফ আই আর গণ্যে রুজু করতঃ তদন্তপুর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দিরাই থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ আজিজুর রহমান জানান, আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলা রুজু করা হয়েছে, তদন্তভার এস আই জাহাঙ্গীরকে দেয়া হয়েছে, তদন্তকরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ মিয়াসহ ৫০ জনকে।
স্থানীয়রা জানান, গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে মোশারফ মিয়া বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করলে দল থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়, কিন্তু তিনি দলীয় এবং মন্ত্রীর লোক পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব সৃষ্টি করে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত মোশাররফ মিয়া প্রভাবশালী মহলের মদদপুষ্ট লোক হওয়ায় কোন লোক তাহার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাযনা।
উল্লেখ্য,গত ১৮ অক্টোবর দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় দুইজন নিহত হন এবং আহত হন অর্ধশত লোক। ঘটনার দিন নিহত হন ভাটিপাড়া গ্রামের আব্দুস সহিদের ছেলে রুহেদ মিয়া (৪৫)। তিনি কাজল নুরের পক্ষের লোক। ঘটনার ৫ দিন পর ২৩ অক্টোবর সংঘর্ষের ঘটনায় আহত শিরু মিয়া তালুকদার নামে আরেকজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি ভাটিপাড়া নয়াহটি গ্রামের মৃত সুন্দর আলীর পুত্র। তিনি রুবেল মেম্বার ও শাহ আলম দ্বীপের পক্ষের লোক। ঘটনার দিন রুহেদ মিয়া নিহতের ঘটনায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়সহ ৭৩জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন নিহতের সহোদর সুয়েদ মিয়া।
ভাটিপাড়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী উদীর হাওড়ে মেঘনা বারঘর জলমহাল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজল নুর এবং রুবেল মেম্বার ও শাহ আলম দীপ গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন ভাটিপাড়া গ্রামের কাজল নুর গ্রুপের লোকজন কাটি বাঁধ দিয়ে মাছ ধরতে গেলে জলমহাল গ্রুপের মালিক পক্ষ রুবেল মেম্বার ও শাহ আলম দ্বীপের লোকজন বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।