বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের বড়গোপটিলায় ভারতের খাসিয়া পাহাড় থেকে নেমে আসা তিনটি বুনো হাতির উৎপাতে সীমান্তে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সীমান্তবাসীর উদ্বেগেরে কথা জেনে পুলিশ ও বিজিবি সীমান্তে মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে নিরাপদে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে হাতি না মারার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। রাতে হাতির উৎপাত থেকে বাঁচতে এলাকাবাসীকে বসতঘরের পাশে আগুনের কু-ুলি জ্বালানোর আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ। রাতে আগুনের কু-ুলি জ্বালিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে কয়েকটি গ্রামের মানুষ।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড় থেকে তিনটি বুনো হাতি নেমে আসে। ওই হাতিগুলো সীমান্তের গ্রাম কড়ইগড়া, মাহরাম, বড়গোপটিলাসহ কয়েকটি গ্রামের আমন ধান, কলাগাছ, অন্যান্য গাছসহ কৃষকদের ক্ষতি করছে। বড়গোপটিলার উপরের দক্ষিণে মাহরাম টিলা জঙ্গলে বর্তমানে ওই তিনটি হাতি আছে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের পাশের গ্রামের আতœীয়-স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন মানুষজন। যারা বাড়িতে অবস্থান করছেন তারা রাতে বাড়ির সামনে আগুন জ্বালিয়ে জেগে আছেন। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানান এলাকাবাসী।
মাহরাম টিলার বাসিন্দা হেলিম মিয়া জানান, আমি মঙ্গলবার রাত থেকেই আতঙ্কে আছি। আমার বাড়ির কাছেই জঙ্গলে তিনটি হাতি অবস্থান করছে। গাছপালা বাঁশ ও ধানক্ষেত নষ্ট করে দিচ্ছে। কোন সময় মেজাজ বিগড়ে লোকালয়ে এসে উৎপাত করে এই চিন্তায় কয়েকটি পরিবার বৃদ্ধ ও শিশুদের প্রতিবেশি গ্রামে আতœীয় স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে। আজ বুধবার তাহিরপুর থানা পুলিশ ও বিজিবি এসে হাতিকে আক্রমণ না করতে মাইকে প্রচারণা চালিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
ইউপি সদস্য সুষমা জাম্বিল বলেন, তিনটি বিশালাকার বুনোহাতির কারণে সীমান্তের কয়েকটি গ্রামের মানুষজন আতঙ্কে আছে। তারা বাড়িঘরে রাতে আগুন জ্বালিয়ে বসবাস করছে। পুলিশ ও বিজিবি এসে নিরাপতে থাকার কথা জানিয়ে হাতিকে আক্রমণ না করতে জনগণকে বলে গেছে।
তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ সরদার বলেন, তিনটি বুনো হাতির কারণে সীমান্তবাসীর উদ্বেগের কথা জেনে আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। পুলিশ রাতে বসতবাড়ির সামনে ‘আগুন থেরাপি’ অব্যাহত রাখার কথা বলেছে। আমরা শুনেছি বসতবাড়ির সামনে আগুনের কু-ুলি থাকলে হাতি ভয় পেয়ে তার নিজের জায়গায় চলে যায়। বন্যপ্রাণীকে যাতে কোন মানুষ না মারে সেজন্য স্থানীয় মসজিদে আমরা মাইকিংও করিয়েছি। হাতিকে মারলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।