স্টাফ রিপোর্টার::
কমরেড বরুণ রায়ের রাজনীতি ছিল দেশ ও মানুষের কল্যাণে। মেহনতি মানুষের মুক্তি আর শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে জীবনভর লড়াই করেছেন তিনি। এ জন্য সহ্য করতে হয়েছে জেল-জুলুম। মানুষের জন্য কাজ করেছেন বলেই মানুষ আজও তাঁকে শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় স্মরণ করে।
সুনামগঞ্জের সাবেক সাংসদ, সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রয়াত রাজনীতিক কমরেড বরুণ রায়ের দ্বাদশ মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন। শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘কমরেড বরুণ রায় স্মৃতি সংসদ’।
অনুষ্ঠানে কমরেড বরুণ রায়কে নিয়ে নির্মিত ‘বিপ্লবী বরুণ রায়’ প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া ১০জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি ও ১০০জন দরিদ্র মানুষকে শীতবস্ত্র হিসেবে নতুন কম্বল প্রদান করা হয়।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সুনামগঞ্জের প্রবীণ শিক্ষক ধূর্জটি কুমার বসুর সভপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জের নারী আন্দোলনের প্রবীণ নেত্রী কমরেড বরুণ রায়ের সহধর্মিণী শীলা রায়, সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজাদ, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নীলিমা চন্দ, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রমেন্দ্র কুমার দে, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দে, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি রবিউল লেইস, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আইনুল ইসলাম বাবলু, সুনামগঞ্জ মুক্তি সংগ্রাম স্মৃতি ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমদ, কবি ও লেখক সুখেন্দু সেন ও মুনমুন চৌধুরী জেলা, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী, কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি চিত্তরঞ্জন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক এনাম আহমেদ, জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি গৌরি ভট্টাচার্য, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি পঙ্কজ দে, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, জেলা যুব ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আসাদ মনি।
অনুষ্ঠানে বরুণ রায় সম্পর্কে বক্তারা আরও বলেন, তাঁর রাজনীতি, দর্শন সবই ছিল খেটে খাওয়া মানুষের জন্য। মানুষের মুক্তির জন্য। মানুষকে ভালোবেসে, মানুষের মুক্তির জন্য যুদ্ধে নেমে সারা জীবন যেন যুদ্ধেই কেটেছে তাঁর। মুক্তির যাত্রাপথে তিনি পেয়েছেন জেল, জলুম, হুলিয়া, আত্মগোপন আর নিরন্তর এক অন্তরীণ জীবন। যে জীবনের ১৪টি বছর কেটেছে নির্জন কারাবাসে।
বক্তারা বলেন, সাম্যবাদ, মনুষ্যত্ব, বাঙালি জাতিসত্ত্বা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক মুক্তিই ছিল তাঁর স্বপ্ন-সংগ্রামের আদর্শ। বরুণ রায় তাঁর জীবন-যৌবনের শ্রেষ্ঠ সময় উৎসর্গ করেছেন দেশ ও মানুষের কল্যাণে। তিনি একজন অসাম্প্রদায়িক ও আলোকিত মানুষ। প্রগতি আর সাহসিকতার দীপশিখা হাতে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি লড়াই করেছেন জীবনভর।