যাদের সুদীর্ঘ চিন্তা পরিশ্রমে ইউনিয়ন কমিটি হতে আজকের ইউনিয়ন পরিষদ তাঁদের মধ্য হতে ১৮৬১ সালের তৎতকালীন অর্থমন্ত্রী লর্ড মেয়ো,লর্ড রিপন, তৎতকালীন ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী গ্লাডস্টোন, আই.সি.এস অফিসার ই কে ওয়েস্টম্যান কোট, মিস্টার ম্যাকুলে, মিস্টার লিভিঞ্জের, স্যার সুরেন্দ্র প্রাসানা সিনহা, মিস্টার হেনরী হুইলার, শের-ই-বাংলা এ কে এম ফজলুল হক অন্যতম। সংক্ষেপে-
ইউনিয়ন কমিটি>ইউনিয়ন বোর্ড>ইউনিয়ন কাউন্সিল>ইউনিয়ন কাউন্সিল ও ত্রান কমিটি>ইউনিয়ন পঞ্চায়েত>ইউনিয়ন পরিষদ।
ব্রিটিশ আমলের পূর্বে প্রাচীন ও মধ্য যুগীয় আমলে খ্রীষ্ট পূর্ব ১৫০০-১০০০ অব্দে গ্রাম পরিষদের উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া খ্রীষ্ট পূর্ব ৩২৪-১৮৩ অব্দে মৌর্য বা মৌর্য পূর্ব যুগে গ্রাম প্রশাসনের অস্তিত্বের স্বাক্ষর পাওয়া যায়। ব্রিটিশ শাসনামলে অর্থনৈতিক প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কারণে ও ব্রিটিশদের ভিত্তি আরও সুদৃঢ় করার জন্য লর্ড মেয়ো ১৮৭০ সালে চৌকিদারী আইন পাশ করেন। গ্রাম চৌকিদারি আইনের ১৮৭০ এর অধীনে ইউনিয়ন পরিষদের সৃষ্টি হয়।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির হিসাব মতে ইতিহাসের পাতা পড়লে চোখে পরে ১৯৭১ সালে ইউনিয়ন কাউন্সিলের নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে ত্রাণ কমিটি হতে আজকের ইউনিয়ন পরিষদ। সারা বাংলাদেশে ৪৫৭১টি ইউনিয়ন এখন। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলায় ৪টি ইউনিয়ন অবস্থিত। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে ১নং আটগাওঁ ইউনিয়ন, ২নং হবিবপুর ইউনিয়ন, ৩নং বাহাড়া ইউনিয়ন, ৪নং শাল্লা ইউনিয়ন।
শাল্লা উপজেলার সবকটি ইউনিয়নের সকল প্রার্থীরা তাঁদের নিজ নিজ গুনে বলীয়ান ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ইতোমধ্যে নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে তারা প্রতিদ্বন্ধিতা শুরু করেছেন। এই লেখার মূল উপজীব্য বিষয়ও হচ্ছে সদর ইউনিয়ন।
প্রথম বার চেয়ারম্যান বাবু মহেন্দ্র সরকারের নামসহ আজকের সদর ইউনিয় হিসাবে পরিচিত ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নে এখন পর্যন্ত ১০জন নির্বাচিত চেয়াম্যানের নাম দেখতে পাওয়া যায়। তাঁদের মধ্যে ৩য় বার চেয়ারম্যান ছিলেন নাইন্দা গ্রামের বাবু যোগেশ চৌধুরী এবং ৭ম বার চেয়ারম্যান ছিলেন ডুমরা গ্রামের বাবু নরেশ চন্দ্র চৌধুরী। বাবু যোগেশ চৌধুরীর ভাতৃষ্পুত্র কাজল বরণ চৌধুরী ও বাবু নরেশ চৌধুরীর তনয় বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টু। যাঁরা আসছে-ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রতিদ্বন্দি।
কাজল বরণ চৌধুরী একজন মেধাবী শিক্ষক। পিতা যোগেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরী। গুনগত মানের শিক্ষকদের মাঝে একক ও অন্যতম। বিশেষ করে ছাত্র/স্কুল জীবনে ছাত্ররাজনীতি বিমুখ অনেক ভাল মানের শিক্ষক থাকলেও উনি ছিলেন ছাত্র রাজনীতি ও রাজনীতি প্রিয় রাজনৈতিক সচেতন শিক্ষক। নব্বই দশকের প্রথমার্ধ্বে গিরিধর স্কুলে চাকুরী নিলেও বসবাস করতেন উপজেলা সদর শাল্লাতে। নির্ধারিত স্কুলটাইম, ছাত্রদের প্রাইভেট পড়ানো ব্যতীত বাকী সময়টুকু স্থানীয় রাজনীতি চর্চায় সময় কাটান। একটা বিষয় উল্লেখ করতেই হয় প্রায় নব্বই দশকের মাঝামাঝি হতে শাল্লায় যে ক’জন ইয়ং শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাষ্ট্রর প্রথম সারির স্তরে স্থান করে নিতে ভাল পড়াশোনায় স্বপ্ন দেখাতে আলোড়ন করেছেন তাঁদের মধ্যে একজন কাজল বরণ চৌধুরী। বহির্বিশ্বে শাল্লার যে তরুনেরা মেধার স্বাক্ষর নিয়ে স্ব স্ব কাজে উদীয়মান তারাও প্রায় সবাই ঐ স্যারেরই ছাত্র। পেশা হিসাবে শিক্ষকতা হওয়ায় সমগ্র উপজেলাতে তাঁর ছাত্র। আবার অনেক ছাত্র উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত ও ভোটার। দেখা যায় তাঁর ঐসব ছাত্রদের অভিভাবকদের সাথে আরেকটি নেটওয়ার্কিং অন্যরকম। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাথে ছিলেন জড়িত। ছিলেন শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষকলীগের সাথে সম্পৃক্ত। তাছাড়াও জানা যায় ছিলেন ১৯৮৪-১৯৮৯ পর্যন্ত বৃন্দাবন কলেজ ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত। কাজেই ছাত্র, কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন হতে বর্তমান পর্যন্ত সমাজের সাধারন জনমানুষের সাথে নানা সম্পর্কে বিদ্যমান।
অপরদিকে বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টু ছাত্র ইউনিয়-ছাত্রলীগ করে যুবলীগের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত। সুদূর ছাত্রাবস্থা মুখ পরিচিত। শুধু তাই নয় পত্রিকার পাতায় যখন শিরোনাম হয় “ রাজাকার পুত্র স্বগৌরবে বলে আমার বাবা রাজাকার, সাকা চৌধুরীর মতো যুদ্ধাপরাধীর ভিত্তিপ্রস্তর ভাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে ছায়া হিসাবে সহযোগিতা, শাল্লা কলেজে ছাত্রভর্তির নামে লুটপাট এসব প্রতিবাদে মানুষের চোখের সামনে থাকেন নান্টু চৌধুরী। আবার নীরিহ মৎসজীবি যখন তাঁর সারাদিনের খাবার জুটানোর জন্য চোখ টলেটলে বাজারে মাছ বিক্রির জায়গা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে চায় তখন নান্টুর গর্জনেই সেই মাছ বিক্রেতা মাছ বিক্রি করে ঘরে ফিরে। সেই মাছ বিক্রেতা এতোটাই নিঃশ্ব চেয়ারম্যান দূরের কথা গ্রামের মেম্বারের কাছে যেতে পারে না কিন্তু নান্টুর চোখের সামনা তাঁদের ভরসা। অপরদিকে হবিবপুর নওয়াগাঁও যখন সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে আক্রান্ত তখনো নান্টু সম্মিলিত মানববন্ধন প্রতিবাদ প্রতিরোধে ধাবমান; যদিও রাজনীতিক প্রতিবন্ধকতায় আটকে যায়।
এক সময়ের ভাঙ্গা ডাকবাক্স, মেরাগাছ, ঝোপঝাড়, মরাপুতা কয়েকজন পুলিশের পুলিশ ফেরী হতে আজকের ঘুঙ্গিয়ারগাওঁ বাজার মূল শাল্লা সদর হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদী মাতৃক বাংলার নদী ঘেষা বড় বড় গঞ্জ-বাজার গড়ে ওঠলেও অত্র অঞ্চলের মুরব্বী জ্ঞানীগুনীজনরা হয়তো নদী ভাঙ্গা থেকে রক্ষা,ভৌগলিক অবস্থান ও ভবিষ্যত ভেবেচিন্তে সকল কিছুর উর্ধ্বে ওঠে স্থান নির্বাচনে অবকাঠামোগত প্রথম থানা পরিবর্তন করেন। সেই সূচনা লগ্নে গড়ে ওঠা নদী ঘেষা শাল্লা গ্রাম ছেড়ে নির্ধারণ করেন ঘুঙ্গিয়ারগাওঁ। অত:পর মরাপুতা, ডাকবাক্স, পুলিশ স্টেশন, কয়েকটি টং দোকান হতে বাজার যা বর্তমানে শাল্লা সদর। অবস্থানগত ৩নং বাহারা ইউনিয়নের ঘুঙ্গিয়ারগাওঁ ঘেষা ঘুঙ্গিয়ারগাওঁ বাজার হলেও ঐতিহাসিক ভাবে নামে রয়েছে ঐ শাল্লা গ্রাম নামেই। যাক এসব কোন সমস্যা না বরং আমাদের পূর্বসূরীদের অগ্রিম চিন্তার ফলন।
এই পূর্বসূরীদের নাম ধামতাৎপরিচয় পুঙ্খানুপুঙ্্খ ভাবে না জানলেও তাঁদের উত্তরসূরীদের একটা প্রজন্ম মোটামুটি ভাবে ব্রিটিশ পিরিয়ড হতে স্থানীয় ও জাতীয় ভাবে বিভিন্ন সামাজিক,সাংস্কৃতিক হতে রাজনীতিতে বিদ্যমান তা পরিলক্ষিত হয় বই পুস্তকে। যা কালের সাক্ষী হিসাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক। এই সমস্ত বইয়ে শাল্লার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট হতে দেখা যায় “এ অঞ্চলের রাজনৈতিক প্রবাদ পুরুষ প্রজাস্বত্ত্ব আইন প্রবক্তা করুণাসিন্ধু রায়ের আন্দোলনের সাথী ছিলেন শাল্লার আঙ্গারুয়া নিবাসী হৃশীকেশ মজুমদার, যোগেন্দ্র চন্দ্র দাস, মহেন্দ্র চন্দ্র দাস। আরো জানা যায় ভারত বিভাগের পূর্বে এ অঞ্চলের লস্কর বাবু, নরেন্দ্র রায় সহ কিছু মানুষ কংগ্রেস দল থেকে মানুষকে গানের মাধ্যমে রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি করতেন। ১৯৪২ সালে কমরেড শ্রীকান্ত দাশের রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রবেশ। তাঁর রাজনৈতিক নেতা ছিলেন কমরেড মনিসিংহ এবং সাংস্কৃতিক গুরু ছিলেন কমরেড সত্যেন সেন এবং সাহিত্যিক রনেশ দাসগুপ্ত। তখন রাজনৈতিক দল ছিল দুটি কংগ্রেস ও কমিউনিস্ট পার্টি। সে সময় কংগ্রেসের নেতা ছিলেন যতীন ভদ্র, সুনামগঞ্জ কমিউনিস্টের নেতা ছিলেন করুণাসিন্ধু রায়। স্থানীয় নেতা ছিলেন হৃষীকেশ মজুমদার। সুরমা বেহেলী উপত্যকায় কৃষক সমিতির সভাপতি ছিলেন করুণাসিন্ধু রায়। ১৯৪৭এর দেশ বিভাগের পর মুসলীম লীগের স্থানীয় নেতা ছিলেন কালাই মিয়া চৌধুরী। ১৯৪৮-এ ভাষা আন্দোলনের দানা বাধায় এই এলাকায় কমিউনিস্ট নেতারা যেমন- কমরেড মনিসিংহ,প্রসূন কান্তি রায়,বারীন দত্ত, সালাম ভাই সহ অনেকেই আত্ম গোপনে ছিলেন। তখনকার সময়ে কৃষক সমিতি নেতারা ছিলেন- উমেশ চক্রবর্তী, ছাদির মিয়া, মহিম চন্দ্র দাস, যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী, যজ্ঞেশ্বর দাস, মধুমিয়া, ডা:কৃষ্ণধন, মন্নান চৌধুরী, হৃষীকেশ মজুমদার, শ্রীকান্ত দাশ, আবীর রঞ্জন দাস (ছাত্র), প্রভাকর চৌধুরী (ছাত্র), সুরেশ চন্দ্র দাস (ছাত্র)। ১৯৫৮ সালের নির্বাচনে শ্রীকান্ত দাস, মহিম দাস ও হৃষীকেশ মজুমদার কৃষক সমিতির একনিষ্ট কর্মী ছিলেন। ১৯৫৪ সালে প্রসূন কান্তি রায় যুক্তফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৫৬ সালে খাগমারি সম্মেলনে শ্রীকান্ত দাশ ও কবি আব্দুল করিম গণসঙ্গীত শিল্পী হিসাবে অংশগ্রহন করেন। ঐ সম্মেলনের পর শাল্লার কর্মীরা ভাসানী ন্যাপে আত্মনিয়েগ করেন। পরবর্তীকালে মুজাফ্ফর ন্যাপে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭০ এর নির্বাচনে ন্যাপ থেকে এ অঞ্চলের গণমানুষের প্রিয় নেতা জনাব সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আলোড়ন সৃষ্টি করে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এবং বাংলাদেশ জন্মের পর তিনিই একমাত্র বিরোধী দলীয় সদস্য যিনি সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন। সুতরাং ভাটি বাংলার শাল্লার মানুষের নিকট বিষয়টি সত্যিই গৌরবের।(বই- বাংলার দুর্গম জনপদ শাল্লা,পৃষ্ঠা- ৪১,লেখক- এ,এস,এম ইউনুছ)।
অপরদিকে বীর মুক্তিযাদ্ধা অ্যাডভোকেট বজলুল মজিদ খসরু প্রণীত ‘রক্তাক্ত -৭১’ বইয়ে শাল্লা থানায় ৫২ সদস্যের সংগ্রাম কমিটি হলেও শুধু ২৩ জনের নাম জানা যায় তাঁরা হলেন (১)সঞ্জব আলী(কমিটির চেয়ারম্যান,কান্দিগাঁও),(২) রামানন্দ দাস(সদস্য সচিব,আঙ্গারুয়া নওয়াগাঁও),(৩)সুরেশ দাস,(৪)যোগেশ চৌধুরী(নাইন্দা),(৫)নজরুল ইসলাম,(৬)সচীন্দ্র দাস(আবদা),(৭)শ্যামল চৌধুরী(কৃষ্ণপুর),(৮)আলতাব আলী লস্কর(শাল্লা),(৯)অলিউর রহমান(শাল্লা),(১০)আব্দুস সাত্তার(দামপুর),(১১)যোগেশ দাস(কাদিরপুর),(১২)রবীন্দ্র চন্দ্র বৈষ্ণব(ভেড়াডহর)
(১৩)ময়নুল চৌধুরী(আটগাওঁ),(১৪)শ্রীকান্ত দাশ(আঙ্গারুয়া),(১৫)মহিম দাস(নারকিলা)
(১৬)কবীন্দ্র দাস(শাশকাই),(১৭)ছাদির মিয়া(মার্কুলী),(১৮)অধীর চন্দ্র দাস(চাকুয়া)
(১৯)রাকেশ চন্দ্র রায়(গদানগড়/গঙ্গানগর)
(২০)মনীন্দ্র চৌধুরী(মামুদনগড়),(২১)সোমচান দাস,
(২২)রুক্ষ্মিণী দাস,(২৩)প্রভাংশু চৌধুরী(সাউদেশ্রী) প্রমূখ। শান্তি কমিটিতে ছিল আব্দুল খালিক(দৌলতপুর),শরাফত আলী (সুলতানপুর),কালাই মিয়া চৌধুরী(মনুয়া), হাশিম মোড়ল(কান্দিগাঁও),খলিল উল্লা(চব্বিশা),নুর মিয়া(মোহাম্মদ নগর),এলিম উদ্দীন(উজানগাঁও)।
মুক্তিযুদ্ধে কিছু রাজাকার আহত নিহত হলেও স্বাধীনতা পক্ষের ও বিপক্ষের অনেকেই সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে রাজনীতিতে করেছেন প্রবেশ। স্বাধীনতার সূচনা লগ্নে তাঁরা থাকলেও পরবর্তীতে অনেক জ্ঞানীগুনী জনও রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছেন। জানা আজানা অনেকের মাঝে- অ্যাডভোকেট জহির আহমদ সোনামিয়া,অ্যাডভোকেট সমীরন সরকার,অলিউল হক,তারা মিয়া, গোপেন্দ্র সমাজপতি,মুক্তিযোদ্ধা শ্রীশ দাস,অ্যাডভোকেট অবনী মোহন দাস,মাস্টার ময়না মিয়া(আনন্দপুর),গনেন্দ্র চৌধুরী,প্রয়াত রবীন্দ্র বৈষ্ণব,নরেশ চৌধুরী,গালু মিয়া,শিক্ষক সুধাংশু শেখর চৌধুরী, শিক্ষক বারীন্দ্র দাস,শিক্ষক মহাপ্রভু দাস চৌধুরী প্রমুখ।
তবে স্বৈরাচার পতন সহ(১৯৮৭) নব্বই দশকের আগে প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতি তথা ছাত্র ইউনিয়ের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে শাল্লায়। ছাত্রনেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শাল্লা কলেজ প্রথম ভিপি গোপাল দাস, কাজল বরণ সিংহ,শিক্ষক অনাদি তালুকদার,আশীষ তালুকদার,শিক্ষক মনোজ কান্তি দাস খোকন,শিমূল দাস,নির্মলেন্দু দাশ(স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার হয়েছিল গিরিধর স্কুলের ছাত্র),কবি ও লেখক নীলকান্ত দাস,শিক্ষক লোকেশ দাস,দিলীপ কুমার চৌধুরী,জগবন্ধু দাস,রামচরণ দাস প্রমুখ।
আবার সোভিয়েত ইউনিয়নে কমিউনিজন ভাঙ্গার ফলে কমিউনিস্ট নেতা জহির আহমদ সোনামিয়া এলাকায় দেখে দেখে কিছু সংখ্যক শিক্ষক, কৃষক নেতাদের নিয়ে বিএনপিতে যোগদান করেন। এর আগে দিরাই হতে নাসির উদ্দীন চৌধুরী তাঁর চাচা জনাব দবিরুল ইসলামকে নিয়ে জাতীয় পার্টির বীজ বপন করেন। যদিও ঐ স্বৈরাচার সরকারের সময়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন কালাই মিয়া চৌধুরী যিনি ১৯৪৭ এর দেশ বিভাগের পর মুসলীম লীগের স্থানীয় নেতা, ১৯৭১-এ শান্তি কমিটির নেতা।
শুরুতে কংগ্রেস, কমিউনিস্ট, ন্যাপ ভাষানী, ন্যাপ মুজাফ্ফর মধ্য দিয়ে চলতে থাকলেও পরবর্তীতে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আওয়ামী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হলে অধিকাংশ জন উনার পেছনে ছুটে যান। আর এর পর হতেই রাজনীতির একটা শেইড তৈরি হয়েছে বলে অনেকের মতামত হতে জানা যায়।