স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইউপি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দী চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোকাররম হোসেনের চেয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরী ৮৪ ভোট বেশি পেয়েছেন। তাই নৌকা প্রতীকে প্রার্থীকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষনার দাবি জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১১জানুয়ারি) বিকেলে চারটার দিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ইউপি নির্বাচনের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মো.সালাহ উদ্দিন এ নিয়ে ওই ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দেওয়া লিখিত আবেদন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে ৫জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেন। ওইদিন ফলাফল ঘোষণা অনুযায়ী, আওয়ামী লীড়ের বিদ্রোহী চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোকাররম হোসেন দুই হাজার ২৬১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরী পেয়েছিলেন দুই হাজার ২০৮ ভোট।
ওই ইউনিয়নের ঘুলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। ওই ভোট কেন্দ্রটিতে ভোটার সংখ্যা ছিল ৯৮২। নির্বাচনের দিন ভোটারের উপস্থিতি ছিল ৮২৭।
৫ জানুয়ারি কেন্দ্রটিতে ভোট গণনা শেষে ওই কেন্দ্রটির প্রিজাইডিং কর্মকর্তা তপন কান্তি তালুকদার চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোকাররম হোসেনের ৪৮৬ ভোট, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরীর ২৬৪ ভোট ও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী জুনায়েদ চৌধুরীর ৫৯ ভোট পেয়েছেন বলে ফলাফল ঘোষণা করেন। ওই কেন্দ্রটিতে বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ছিল ১৮টি।
ওই ইউনিয়নের ঘুলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক সাইফুর রহমান, ওই বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক ও ছাত্র ছাত্রীদেরকে নিয়ে ৯ জানুয়ারি রবিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বিদ্যালয়টির বিভিন্ন কক্ষ পরিস্কার করতে গিয়ে ঘুলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে তিনটি খামের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে সিলমারা ব্যালট পেপার দেখতে পান।
পরে প্রধান শিক্ষক সাইফুর রহমান বিষয়টি ইউএনও মো.মুনতাসির হাসানকে মুঠোফোনে অবগত করেন। ওইদিন বেলা পৌনে দুইটার দিকে ঘুলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ের এক কোনে থেকে ৮০৯টি সিলমারা ব্যালট পেপার উদ্ধার করেন ইউএনও মুনতাসির হাসান।
বেলা দুইটার দিকে ইউএনওর উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষক উদ্ধারকৃত এসব ব্যালট পেপার প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেন। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ওইদিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ওই ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা আল মাহমুদ হাছান, থানার ওসি মো.খালেদ চৌধুরী ও গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে উদ্ধার হওয়া ব্যালট পেপারগুলো গণনা শুরু করেন। ৮০৯টি ব্যালট পেপারের মধ্যে চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোকাররম হোসেন ৩৪৯ ভোট, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরী ২৬৪ ভোট, ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী জুনায়েদ চৌধুরী ৫৯ ভোট পান। আর বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ছিল ১৩৭টি।
এ অবস্থায় ওই ইউনিয়নের সবকটি ভোট কেন্দ্রের হিসার অনুযায়ী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরী পেয়েছেন ২২০৮ভোট ও তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দী চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোকাররম হোসেন পেয়েছেন ২১২৪ভোট। এ অবস্থায় ৮৪ভোট বেশি পেয়ে সেলিম রাজা চৌধুরী বিজয়ী হয়েছেন।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মো.সালাহ উদ্দিন বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরী প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোকাররম হোসেনের চেয়ে ৮৪ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে আনুষ্টানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করার জন্য আমি প্রার্থীর পক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি।
সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আল মাহমুদ হাছান বলেন, এ সংক্রান্ত একটি আবেদন আমার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে । আবেদনটি পড়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।