বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থতির উন্নতি হয়েছে। তবে বানভাসি মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে ত্রাণের জন্য অস্থির হয়ে ওঠেছেন। ত্রানবাহী নৌকা দেখলেই তারা ডাকতে শুরু করেছেন। নৌকা ভিড়লেই ত্রাণের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন তারা। এদিকে বৃহষ্পতিবার আলাদাভাবে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সেনা প্রধান, র্যাব প্রধান, পুলিশ প্রধান। তারা বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণও বিতরণ করেন। ত্রাণ বিতরণকালে বন্যার্ত মানুষের পাশে তাদের বাহিনী কাজ করবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান ড. বেনজীর আহমদ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন।
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে বন্যা দূর্গতদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী ও রান্নাকরা খাবার বিতরণ করেন বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান ( আইজিপি) ড. বেনজীর আহমদ। দুপুরে তিনি তাহিরপুরের বাদাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্রের আশ্রয় নেয়া বন্যাদুর্গত মানুষের সাথে কথা বলে তাদের খোঁজখবর শেষে শতাধিক বন্যাদুর্গতদের মাঝে
ত্রাণ বিতরণ করেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত দূর্গম এলাকা গুলোতে পুলিশ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেন । বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসনের সকলে মিলে কাজ করার আহ্বান জানান।
হাওরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। আরও বলেন, জনগণ, রাজনীতিবিদ, প্রশাসন সকলের সমন্বয়েই হাওর বাসীর এই সমস্যা উত্তরণের একসাথে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি হাওরাঞ্চলে যেখানে যোগাযোগ ভালো সেখানে ত্রাণ নিয়ে সবাই যায়। আমি অনুরোধ করবো হাওরাঞ্চলে যেখানে সহজেই যাওয়া যায় না। হাওরের দূর্গম গ্রাম, সীমান্তবর্তী গ্রাম ও দূরবর্তী প্রত্যন্ত গ্রাম গুলোতে সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করেন। র্যাব ফোর্সেস এর মহাপরিচালক, অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরি আব্দুল্লাহ আল-মামুন বৃহষ্পতিবার দুপুরে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ত্রাণ বিতরণ করেন।
এদিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মঈনপুর গ্রামে বন্যাশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বলেন, জাতীয় দুর্যোগ জাতীয়ভাবে মোকাবিলা করতে হবে। দুর্যোগকে সাহস নিয়ে আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে। এখনও অনেক পানি বন্দী আছে। যতদিন প্রয়োজন হবে সেনাবাহিনী সুনামগঞ্জে ততদিন থাকবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মঈনপুর গ্রামে বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এমন সক্ষমতার জায়গায় পৌছেছে যে এরচেয়ে বড় দুর্যোগও মোকাবিলা করতে পারবো আমরা। দুর্যোগ এসেছে সেটা সাহস, ধৈর্য্য এবং আন্তরিকতার সাথে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের প্রথম লক্ষ্য হলো মানুষের জীবন বাঁচানো। দ্বিতীয়ত তাদের স্বাস্থ্য এবং অন্য বিষয়গুলো খেয়াল রাখা। এই লক্ষে যা করনীয় আমরা করে যাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক বন্যার খোঁজ খবর রাখছেন। উনি অনেক তথ্য আমাকে দেন, যা দেখে আমার টিম দিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ করি।
এসময় জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, পৌর মেয়র নাদের বখত উপস্থিত ছিলেন।