1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩ অপরাহ্ন

সুনামগঞ্জে ‘ষড়ন্ত্রমূলক’ মামলার ভার বইছেন আ.লীগের ত্যাগী নেতারা ।। তৃণমূলে ক্ষোভ

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২, ৬.৪৩ পিএম
  • ২৬৬ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি::
প্রায় ১৪ বছর ধরে আওয়ামী ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। এই দীর্ঘ সময়ে ক্ষতার স্বাদ পেয়ে হাইব্রীডরা কিছু সুযোগ সুবিধা আদায় করে নিলেও নিবেদিতপ্রাণ ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা বঞ্চিত। তারা শুধু বঞ্চিতই নয় দলীয় উপকোন্দল এবং ভিন্ন দলের লোকদের ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ মামলায় জেল, জুলুম খাটার পাশাপাশি হয়রানির শিকারও হচ্ছেন বলে তৃণমূলের অভিযোগ। এতে তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও নিবেদিতপ্রাণ ত্যাগী নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের নেতাকর্মীরা অপরাধ না করেও ভিন্ন দলের লোকদের দায়েরকৃত মামলায় নির্যাতিত হওয়ায় অনেকেই ক্ষোভ জানিয়ে তাদেরকে দলীয়ভাবে সহযোগিতা করার দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে গত বুধবার সুনামগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও বিশিষ্ট দানশীল ব্যক্তি সেলিম আহমেদকে এক সপ্তাহের আগের এক মামলায় আসামি না হওয়ার পরও সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠায় পুলিশ। ওই মামলাটি করেছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা যুবদলের সহসভাপতি অলিউর রহমান। ১১ আগস্ট দায়ের কৃত মামলাটিতে সেলিম আহমেদের নামও ছিলনা এবং চার্জশীটেও কোন ইঙ্গিত ছিলনা তার সম্পৃক্ততার। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতেও তার সম্পৃক্ততা মিলেনি। যাদুকাটাসহ বিভিন্ন নদ নদীতে বিআইডব্লিউটিএর টোল টেক্সের নামে অবৈধ টাকা উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় সেলিম আহমদকে ‘১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি’ মামলায় সন্দেহভাজন আসামি দেখিয়ে আটক করা হয়। একই সঙ্গে তার দশদিন রিমা- আবেদন করলে আদালত জেলঘেটে দুইদিন জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য সেলিম আহমদ এর আগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। সুনামগঞ্জে রাজপথের একজন সক্রিয় সংগঠক হিসেবে পরিচিত তিনি। তার বাবা ও চাচা ১৯৭৫ সনে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের পক্ষে কথা বলায় জেল খেটেছিলেন। সেলিম আহমদ বিভিন্ন সময়ে থানায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন, থানা ভবনসহ প্রশাসনিক বিভিন্ন ভবনের উন্নয়ন কাজে অর্থ সহায়তা, হাওরের বাধ নির্মাণে প্রশাসনকে অর্থ সহায়তা, শিক্ষার্থী, হতদরিদ্রসহ বন্যার্তদের সহায়তা করে প্রশংসিত হয়েছেন। এবারের ভয়াবহ বন্যায় তিনি প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার খাবারসহ বিভিন্ন জিনিষপত্র বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করেছেন। তিনি জেলা প্রশাসনকেও সম্প্রতি বন্যার্তদের গৃহনির্মাণে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা নগদ সহায়তা দিয়েছেন। এই নেতা ও দানশীল ব্যক্তিকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আসামি করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুবের আহমদ অপু। রাজপথের সবচেয়ে সক্রিয় নেতা ও আওয়ামী লীগের নির্যাতিত কর্মী। বিএনপির অপারেশন ক্লিনহার্টে দেশের প্রথম নির্যাতিত ছাত্রনেতা নেতা তিনি। ওয়ান ইলেভেনে শেখ হাসিনার পক্ষে কথা বলায় নির্যাতিত হয়েছেন। ত্যাগী, নিবেদিতপ্রাণ ও এই সাহসী নেতার বিরুদ্ধে গত বছর জেলা বিএনপির এক নেতার পরিবার মামলা করে। এতে তিনি হয়রানির শিকার হন।
গত বছর শাল্লা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান যুবলীগ নেতা অরিন্দম চৌধুরী অপুর সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত থাকায় শাল্লা থানার এক পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। এই মামলায় স্বাক্ষী করা হয় বিএনপি ও জামায়াতের লোকদের। অরিন্দম অপুর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করায় সিলেট ডিআইজি অফিসে লিখিত আবেদন করেন এলাকাবাসী। তারা মানববন্ধনসহ তার মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেন। অপু এই মামলায় বেশ কিছুদিন জেলও খেটেছেন।
শাল্লা উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু হাওর দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় মামলার আসামি হয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এভাবে ধর্মপাশা উপজেলায় হেফাজতের নাশকতা ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কথা বলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা আফজাল খানকে নাজেহাল করে জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। এই ঘটনাটি সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই ঘটনায় এই এলাকার শীর্ষ আওয়ামী লীগ জনপ্রতিনিধির পরিবারের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ।
এভাবে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায়, ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ আদর্শিক নেতাকর্মীরা বিএনপিসহ ভিন্ন দলের ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আসামি হয়ে জেল জুলুম সইছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৃণমূল নেতৃবৃন্দ।
সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ সুজন বলেন, সুনামগঞ্জে রাজপথের সাহসী, আদর্শিক নেতাকর্মীরা ভিন্ন দলের লোকদের ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় নির্যাতিত হচ্ছেন। এতে প্রকৃত নেতাকর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অবিলম্বে আমাদের ত্যাগী নেতৃবৃন্দের উপর থেকে মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। এভাবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণকারী নেতাকর্মীরা নির্যাতিত হলে তৃণমূলের ত্যাগী ও বঞ্চিত নেতাকর্মীরা অভিমানে দূরে সরে যাবেন।
শাল্লা উপজেলা যুবলীগ নেতা হিমেল সরকার বলেন, আমাদের ত্যাগী ও আদর্শিক নেতারা এখন মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক ও ফাঁসানো মামলায় নির্যাতিত হচ্ছেন। ভিন্ন দলের লোকজন আমাদের কোন্দলকে কাজে লাগিয়ে নেতাদের নামে মামলা করে শুধু হয়রানিই করছেন না দলকে শক্তিহীন করে দিচ্ছে। এ নিয়ে শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ কেন্দ্রকে ভাবতে হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুবের আহমদ অপু বলেন, আমি বিএনপির অপারেশন ক্লিনহার্ট, ওয়ান ইলেভেনসহ দলের দূঃসময়ের প্রতিটি কর্মসূচিতে অগ্রভাগে থাকায় নির্যাতিত হয়ে আসছি। আমাদের দল ক্ষমতায় থাকার পরও আমাকে বিএনপি নেতার পরিবার মিথ্যে মামলা দিয়েছিল। এখনো জামায়াত-বিএনপি আমার ও আমার আদর্শিক সংগঠন আওয়ামী লীগের ক্ষতি করতে চাচ্ছে নানাভাবে। আমাদের দলে ডুকে পড়া হাইব্রীডরা ভিন্নদলের সঙ্গে মিশে সংগঠনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাশপাশি ষড়যন্ত্র করে নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যে ও হয়রানিমূলক মামলাসহ সংগঠনেরই ক্ষতি করার অব্যাহত চেষ্টা করছে। এভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শধারী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্তাশীর ত্যাগী নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা যাবেনা।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!