বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ জেলা যুবদলের সহসভাপতি অলিউর রহমানের ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ মামলায় কারান্তরীন জেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি সেলিম আহমেদ মুক্তি পেয়েছেন। রবিবার দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নিশাদুজ্জামান তার জামিন মঞ্জুর করেন। রবিবার বিকেলে কারাগার থেকে মুক্তির সময় হাজারো নেতাকর্মী সেলিম আহমদকে বরণ করতে জেল গেটে জড়ো হন। তারা সেখান থেকে শোডাউন করে মিছিল দিয়ে সুনামগঞ্জ শহরে সেলিম আহমদকে নিয়ে আসেন। এসময় ক্ষুব্দ নেতাকর্মীরা অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
উল্লেখ্য গত ১৫ আগস্ট তাহিরপুরে জাতীয় শোক দিবসে কয়েক হাজার মানুষের শোডাউন ও সমাবেশের কারণে এই আসনের এক শীর্ষ জনপ্রতিনিধি ক্ষুব্দ হয়ে হয়রানীমূলক এই মামলায় সেলিম আহমদকে যুক্ত করেন বলে নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে আসছেন। ক্ষুব্দ নেতাকার্মীসহ সুনামগঞ্জ-১ আসনের দলীয় নেতাকর্মীরা আগামী সংসদ নির্বাচনে তাকে সুনামগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দানের দাবিও জানান। গত ১৭ আগস্ট তাহিরপুর থানায় একটি চাদাবাজি মামলায় আসামি না থাকার পরও সেলিম আহমদকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
এদিকে আদালত সেলিম আহমেদের জামিন মঞ্জুর করেছে খবর ছড়িয়ে পড়লে জাতীয় শ্রমিক লীগ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার নেতৃবৃন্দসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ জেলগেটের দিকে গিয়ে জড়ো হোন। বিকেল ৪টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত চেকনিখাড়া সেতু থেকে হালুয়ারগাও কারাগার পর্যন্ত দীর্ঘ যাজটের সৃষ্টি হয়। কয়েক শ মোটর সাইকেলসহ গাড়ি নিয়ে সেলিম আহমদকে কারাগার থেকে মিছিল দিয়ে সুনামগঞ্জ শহরে নিয়ে আসেন নেতাকর্মীরা। তার গলায় ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আসামি করায় ও তাকে কারাগারে প্রেরণ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে কারা ফটক থেকে সুনামগঞ্জ শহর প্রদক্ষিণ করেন। এসময় সেলিম আহমেদ নেতাকর্মীসহ শুভাকাঙ্খীদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে তাদের ভালোবাসার জবাব দেন।
প্রসঙ্গত সুনামগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সুনামগঞ্জ শহরের হাসননগর এলাকাবার বাসিন্দা অলিউর রহমান কর্তৃক বিআইডব্লিউটিএর নামে অন্যায্য টোল আদায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সেলিম আহমদ ও তার পরিবার। এতে ক্ষুব্দ হয়ে গত ৯ আগস্ট তাহিরপুর থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন সুনামগঞ্জ জেলা যুবদলের সহসভাপতি অলিউর রহমান। এই মামলায় সেলিম আহমদের নাম ছিলনা এবং অভিযোগপত্রেও তার বিষয়ে কোন ইঙ্গিত ছিলনা। শুরু থেকেই এই মামলাটিকে ষড়যন্ত্রমূলক হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছেন এলাকাবাসী। এই মামলায় গত ১৭ আগস্ট সেলিম আহমেদকে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ।
সেলিম আহমেদ করোনাকালে সুনামগঞ্জ-১ আসনের অসহায় ও নিঃস্ব মানুষদের আর্থিক সহায়তা, চলতি বছরের হাওরের দুর্যোগের সময় প্রশাসনকে আর্থিক সহায়তা, অসহায় বন্যার্তদের মধ্যে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার খাদ্য বিতরণ, জেলা প্রশাসনকে বন্যার্তদের তহবিলে ১০ লক্ষ টাকা প্রদানসহ বিভিন্ন ভাবে অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষদের আর্থিক সহায়তা করে আসছেন। এতে সুনামগঞ্জ-১ আসনের এক শীর্ষ জনপ্রতিনিধি ক্ষুব্দ ছিলেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ আছে।