স্টাফ রিপোর্টার
জয়ন্ত সংস্কৃতিকর্মী ছিলেন, সাংবাদিক ছিলেন। দেশ ও মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা ছিল তাঁর। পন্ডিত রামকানাই দাশ, বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম, রাধারমণ সহ বিভিন্ন লোককবির গান ছিল তাঁর হৃদয় জুড়ে। বিভিন্ন সময়ে আলাপে কিভাবে এই মহানজনদের সৃষ্টি সংরক্ষণ ও মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া যায় সেই চিন্তার কথা বলেছেন জয়ন্ত কুমার সরকার। প্রখ্যাত লোককবিদের পাশাপাশি যারা প্রত্যন্ত এলাকায় নিভৃতে লোকসংস্কৃতির চর্চা করেছেন বা করছেন কিন্তু সেভাবে প্রচারে আসেননি সেইসব মহাজনদের সাথে মানুষের পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এভাবেই তিনি আমাদের মাঝে টাইলার প্রতাপরঞ্জন কিংবা দিরাইয়ের মুকুল ঠাকুর কে তুলে ধরেছেন। তাদের সৃষ্টির কথা জানিয়েছেন। গত মার্চে শান্তিগঞ্জের টাইলায় প্রথমবারের মতো প্রতাপরঞ্জন ধামাইল উৎসব করলেন। সেই উৎসবে সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। নিজ উদ্যোগে গঠন করেছিলেন কালনির কূলে ও পিইয়াইন দুইটি ধামাইল দলও।
রবিবার রাত ৮টায় দৈনিক সুনামগঞ্জের খবর পরিবারের পক্ষ থেকে খবর কার্যালয়ে ‘জয়ন্ত স্মরণ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।
বক্তারা বলেন, শুধু কি তাই হাওরে ফসল ডুবি কিংবা সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্দশা তার কলমে উঠে এসেছে। পাশে দাঁড়িয়েছেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের। সব সময় চেষ্টা করেছেন মানুষের পাশে দাঁড়াতে, মানুষের কথা বলতে। তাঁর শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। আমরা তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। সৃষ্টিকর্তা যেনো তার পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দেন।
এছাড়াও বক্তারা সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সহায়তা যেনো জয়ন্ত কুমার সরকারের পরিবার পায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেন।
দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরের সহকারী সম্পাদক আ্যাডভোকেট এনাম আহমেদ’র সভাপতিত্বে এবং স্টাফ রিপোর্টার সাইদুর রহমান আসাদ’র সঞ্চালনায় ‘জয়ন্ত স্মরণ’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরের সম্পাদক ও প্রকাশক পঙ্কজ কান্তি দে, বিশিষ্ট সাংবাদিক উজ্জ্বল মেহেদী, দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরের সহকারী সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল হাছান শাহীন, জাহাঙ্গীর আলম, আরটিভির ও আমাদের সময়ের জেলা প্রতিনিধি বিন্দু তালুকদার, ৭১ টিভি ও দৈনিক কালের কন্ঠের জেলা প্রতিনিধি শামস শামীম, চ্যানেল ২৪ জেলা প্রতিনিধি এ আর জুয়েল, দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরের বার্তা সম্পাদক সজীব দে, স্টাফ রিপোর্টার লিপসন আহমদ, এনামুল হক জুবের, সোহানুর রহমান সোহান, কামরান আহমদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকষ্মাৎ মারা যান তরুণ সাংস্কৃতিক সংগঠক ও উদীয়মান সাংবাদিক জয়ন্ত সরকার। মৃত্যুকালে তিনি দুই শিশু সন্তান ও স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে মারা যান। তিনি দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।