স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ সীমান্ত থেকে বিভিন্ন সময় জব্দকৃত প্রায় ১২ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি। রবিবার সকালে সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির দফতর মাঠে মাদকদ্রব্য ধ্বংস কার্যক্রমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। দুর্গম এলাকার সীমান্তে দায়িত্বপালন করে সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি সীমান্তে অপরাধপ্রবণতা কমিয়ে নিয়ে আসায় ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী। মাদকদ্রব্য ধ্বংসযজ্ঞ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, রিজিয়ন কমা-ার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল ইসলাম, সিলেট সেক্টর কমা-ার কর্ণেল জিএইচ এম সেলিম, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. এহসান শাহ প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্যে সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক লে.ক. মো. মাহবুবুর রহমান জানান, ২০১৯ সনের ২২ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সনের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মালিকানাবিহীন নানা প্রজাতির মাদক জব্দ করেন সীমান্তের বিভিন্ন বিউপির সদস্যরা। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা ৪৫ হাজার ৬৮১ বোতল মদ, ১ হাজার ৭৩৭ বোতল বিয়ার, ৪৪৪ কেজি গাজা, ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার ৬৩৪ প্যাকেট ভারতীয় বিড়ি, ১ হাজার ৪১৫ পিস ইয়াবা এবং ৩২ কেজি তামাক পাতা ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়াও নিয়মিত অভিযানে যেসব অবৈধ পণ্য জব্দ করা হয়েছে তা প্রচলিত আইন মেনে শুল্ক কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। ধ্বংসকৃত মাদকের মূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা বলে জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমাদের জেলায় ২৮ বিজিবির অধীনে ১২০ কিলোমিটার সীমান্ত যা ভারতের তুলনায় অত্যন্ত দুর্গম। ভারতের বিএসএফরা যখন গাড়িতে করে সীমান্তে টহল দেয় আমাদের বিজিবি সদস্যরা তখন পায়ে হেটে, কাদামাটি ভেঙ্গে কষ্ট করে টহল। তারপরও তারা সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। যার প্রমাণ আজকের বিশাল পরিমাণের মাদক ধ্বংস।
মাদক ধ্বংস অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, নবম-দশম শতক থেকে বাঙালিরা নিজের দায়িত্ব নিজেরা পালন করতে পারেনি। বাইরের লোক শাসন করেছে। আমরা পরাধীন ছিলাম। বাইরের বুলবুলি আমাদের ধান খেয়ে যেতো। এখন আমাদের উৎপাদিত ফসল আমরাই খাই। তিনি বলেন, গত ৫২ বছর আগে আমরা আমাদের নেতাদের নেতৃত্বে নিজের দায়িত্ব নিজেরা পালন করছি। এক সময় আমাদের কিছুই ছিলনা। এখন বিজিবির মতো সুশৃঙ্খল অনেক প্রতিষ্ঠান হয়েছে। তারা দেশের সীমান্ত রক্ষার সঙ্গে দুর্যোগ-দুর্বিপাকে জনগণের সেবাও করছে। দেশ থেকে মাদক নির্মূলের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত জিরো ট্রলারেন্স বাস্তবায়ন করতে দুর্গম সীমান্তে কাজ করছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিজিবির অবকাঠামো ও সীমান্তের উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের মাধ্যমে পরিকল্পনামন্ত্রণালয়ে প্রকল্প পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশের নেতাদের আতœত্যাগের ফলে এবং দেশের মানুষদের পরিশ্রমে দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। এখন আমাদের সরকারে অত্যন্ত শক্তিশারী নেতৃত্বে আছেন শেখ হসিনা। তিনি দৃঢ়ভাবে শত প্রতিকূলতা, দারিদ্র, কভিড মোকাবেলা এবং অস্থিতিশীল বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে শক্ত হাতে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে দেশ আরো উন্নত ও সুন্দর হব। মন্ত্রী বলেন, তবে উন্নয়নের সঙ্গে আমাদের মানসিক ও সাংস্কৃতি উন্নয়নেরও প্রয়োজন।