স্টাফ রিপোর্টার::
আতিফ, মোসাদ্দিক, নোসাইবা, কাব্য সুনামগঞ্জ পিটিআই (প্রাথমিক প্রশিক্ষক ইনস্টিটিউট) এর প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বইহীন প্রাকপ্রাথমিকে পরীক্ষা দিয়ে তারা প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। নতুন বইয়ের প্রতি ছিল তাদের দুর্নিবান টান। নতুন বই পেতে সেজেগুজে নতুন ব্যাগ নিয়ে গত ১ জানুয়ারি স্কুলেও গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই আসেনি। তাই মলিনমুখে ফিরেছিল বাড়ি। স্কুল খোলার পর তারা নিয়মিত প্রতিদিন স্কুলে গেলেও নতুন বই পায়নি। অবশেষে ২৮ দিন পর রবিবার সকালে তারা আংশিক নতুন বই পেয়েছে। ইংরেজি ও গণিত বইটি পেয়ে শ্রেণিকক্ষেই পাতা উল্টিয়ে বিষ্ময়ে দেখেছে বই। এভাবে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও বই পেয়ে বিষ্ময়ে পৃষ্ঠা উল্টিয়েছে। পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেল এখনো ৩য়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই আসেনি।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে ছাতক, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, শাল্লা, দিরাই, জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই পাওয়া যায়নি। একইভাবে সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক এবং তাহিরপুর উপজেলায় ৩য়, চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কোন বই পায়নি। জামালগঞ্জ উপজেলায় এই তিন শেণিতে ৫০ ভাগ বই পাওয়া গেছে।
প্রায় এক মাস সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও নতুন বই না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে মনোযোগী হতে পারছেন না। শিক্ষকরা নানাভাবে তাদেরকে ক্লাসে ধরে রাখার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। তবে বই সব বই কখন আসবে অভিভাবকদের প্রশ্নের এই নিশ্চয়তা দিতে পারেননি শিক্ষকদের কেউ।
সুনামগঞ্জ পিটিআই পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের অভিভাবক রেজা মিয়া বলেন, আমার ছেলে শিশুশ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে উঠেছিল। জানুয়ারির প্রথম দিন থেকেই প্রতিদিন নতুন বইয়ের আশায় সে স্কুলে যাচ্ছিল। প্রায় এক মাস পরে ইংরেজি ও গণিত বইটি পেয়েছে। বই পেয়ে সে খুব খুশি। তবে পুরো সেট বই পেলে ভালো হতো।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এসএম আব্দুর রাহমান বলেন, আমাদের কাছে প্রাথমিক বরাদ্দের যত বই এসেছিল আমরা বিতরণ করে দিয়েছি। তবে বেশ কয়েকটি উপজেলায় আমরা এখনো বই পাইনি। বই পাওয়ার সাথে সাথেই আমরা বিতরণ করে দেব।