1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

শহরে পৌরসভা পরিচালনাধীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে এসে বিপাকে শিক্ষার্থীরা

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট, ২০১৭, ২.৫১ পিএম
  • ৫০২ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি::
পৌর শহরের বড় পাড়ায় অবস্থিত পৌরসভার পরিচালনাধীন ‘বড়পাড়া আব্দুর রহমান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে সকাল থেকে ছাতা মাথায় অপেক্ষারত। বৃষ্টি শেষ হবে, তার পর পরীক্ষা দিবে তারা। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে গেলেও, বৃষ্টি থামার কোন লক্ষণ নেই। তাই নিরুপায় হয়ে বিদ্যালয়ের আশপাশের বাড়ির বারান্দা ও শোয়ার ঘরের মাটিতে বসিয়ে পরীক্ষা নেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
গত এপ্রিল মাসে ঘটে যাওয়া ঘুর্ণিঝড় ও বিগত সময়ে হওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বেহাল দশায় পতিত হয়েছে বিদ্যালয়ের আধাপাকা ভবনটি। তিনটি ক্লাস রুমের চালের বড় বড় ছিদ্র দিয়ে খুব সহজেই আকাশ দেখা যায়। চালের অনেক জায়গায় টিন নেই। তাই সোমবার সকালে দ্বিতীয় বার্ষিক পরীক্ষার প্রথম দিনের পরীক্ষা দিতে এসে বিপাকে পড়েছিল বিদ্যালয়ের প্রায় দুই শত ক্ষুদে শিক্ষার্থী। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের চালের ছিদ্র ও ফাঁক দিয়ে আসা বৃষ্টির পানি ক্লাস রুমে জমে একাকার। টানা বৃষ্টির কারণে অপেক্ষমাণ পরীক্ষার্থীদের ছাতা টানিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এ যেন খোলা আকাশের নিচে মেঘের কাছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আত্মসমর্পণ। রোজিনা, আবু তাহের, তানজিনা, সালমানসহ পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বৃষ্টিতে ভিজতে দেখা যায় পরীক্ষার হলে।
রোজিনা জানায়, সকালেই পরীক্ষা দিতে আসছি। সারা ক্লাস রুম জুড়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। পরীক্ষা দিতে পারব কিনা জানি না। আমরা আমাদের স্কুলের উন্নয়ন চাই। বিদ্যালয়ের এমন অবস্থা দেখে অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরে গেছে। আর কিছু শিক্ষার্থীদের আশেপাশে বাড়ি ঘরে নিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আছমা বেগম বলেন,‘ কাল বৈশাখী ঝড়সহ নানা কারণে বিদ্যালয়ের ভবনটির বেহাল দশা। ভবনের চাল দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। বৃষ্টির কাছে নিরুপায় হয়ে প্রতিবেশিদের বাড়ির বারান্দায় ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা নিয়েছি।’
জানা যায়, গত ১৯৯৫ সালে এ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি জানান, স্কুলের টিন পরিবর্তন, বেঞ্চ ক্রয় ও দাপ্তরিক খাতে আড়াই লক্ষ টাকা প্রয়োজন। পৌরসভা থেকে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এই পরিমাণ টাকা চাহিদার তুলনায় খুব অপ্রতুল বলে দাবি তাদের। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ রয়েছেন ৯ জন শিক্ষক এবং ১০ মাস যাবত তাদের বেতন বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা ছালেহা চৌধুরী বলেন, ‘খুব কষ্ট করে এখানে চাকরি করছি। কষ্টে করতে আমরা রাজি, কিন্তু ১০ মাস হলো এখন পর্যন্ত কোন বেতন পাইনি। ২০০ শিক্ষার্থী বসার জন্যে রয়েছে কয়েকটি বেঞ্চ। তাই বস্তা ও পলিথিনের উপর বসে ক্লাস করতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয়টিতে স্যানিটেশনের অবস্থা খুবই নাজুক। নেই কোন টিউবওয়েল ও টয়লেটের ব্যবস্থা। এতে ক্লাস চলাকালীন সময়ে সমস্যায় পড়েন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। পৌর শহরে বিদ্যালয়টির এমন করুণ অবস্থা মেনে নিতে পারছেন না অভিভাবক ও শিক্ষকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
সাদ্দাম আহমদ, সেলিম আহমদ, নিরুন নেছাসহ একাধিক অভিভাবক বিদ্যালয়টির উন্নয়নে দ্রুততার সাথে পৌর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সভাপতি স্থানীয় পৌর কাউন্সিলার আহমেদ নুর বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পৌরসভার পরিচালনাধীন হলেও এর দায়িত্ব নিতে রাজি নয় পৌর কর্তৃপক্ষ। ৭ বছরে এই প্রথম পৌরসভা থেকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান পাওয়া গেছে, যা অতি নগন্য। শিক্ষকদের বেতন ভাতা ১০ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয়ের টিনের জন্য জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের বরাবরে আবেদন করেছি। দেখা যাক কোন সাহায্য পাওয়া যায় কি না।’

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!