স্টাফ রিপোর্টার::
সারাদেশে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির প্রতিবাদে ও সর্বাতœক রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবিতে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের উদ্যোগে মঙ্গলবার ২৮ ফেব্রুয়ারী বিকেলে লাল পতাকা নিয়ে মিছিল করেছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ। বিকেলে রায়পাড়স্থ দলের অস্থায়ী কার্যালয়ের সম্মূখ থেকে এক লাল পতাকাসহ এক মিছিলটি সুনামগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় আলফাত উদ্দিন চত্বরে এসে সমাবেশ করে।
বাংলদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সুখেন্দু তালুকদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি রতœাংকুর দাস জহর, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম ছদরুল, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির আহ্বায়ক দিপ্তি সরকার, কাকলি দাস, হোটেল রেষ্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়ন সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি লিলু মিয়া, হকার্স শ্রমিক সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল হাই, আইয়ুবুর রহমান প্রমূখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, যখন মূল্যস্ফীতি-মূদ্রাস্ফীতি অব্যাহতভাবে বাড়ছে-তেল-লবন-চিনি,ডিম, আদা, পিয়াজ গ্যাস বিদ্যুতসহ সকল জ্বালানীর কষাঘাতে জনজীবনে নাবিশ্বাষ ।তখন সাম্রাজ্যবাদী লগ্নিপুঁজি ও এদেশীয় দালাল পুঁজির বেপরোয়া মুনাফার স্বার্থে সরকার জাতীয় মজুরি কমিশন গঠন ও জাতীয় নিম্নতম মজুরি ঘোষণার কার্যকরী কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। নিম্নতম মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন সেক্টরে ঘোষিত মজুরির ক্ষেত্রেও সরকার মালিকদের চাওয়া বাস্তবায়ন করে চলেছে। আবার মজুরি ঘোষিত হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা বাস্তবায়ন করে না মালিক পক্ষ। তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে হোটেল সেক্টর। দেশ আজ শ্রমিকের শ্রম শোষণে কয়েদখানায় পরিণত হয়েছে
বক্তাগণ আরো বলেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম লাগামহীনভাবে অব্যাহত গতিতে বেড়ে চলায় যখন প্রয়োজন ঘোষিত মজুরি পর্যালোচনা করে শ্রমিকদের রক্ষায় নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা, ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত মহার্ঘ্যভাতা প্রদান এবং রেশনিং-এর ব্যবস্থা করা। তখন সরকারের মালিক তোষণনীতির কারণে এই সকল আইন স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত বিষয়গুলোকে পাশ কাটিয়ে সরকার চলেছে। আজ শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে অনিরাপদ, চাকরির ক্ষেত্রে অনিশ্চিত, প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের সাথে আসছে লাশের সারি, বাজারদরের সাথে টিকতে না পারায় সন্তানের লেখা-পড়া বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় নামমাত্র চিকিৎসা টুকুও নিতে পারছে না, একজনের পরিবর্তে আজ বৌ-বাচ্চা মিলে কাজ করেও সংসার চালাতে পারছে না। এই বাস্তব চিত্রকে আড়াল করে বিদেশী প্রভুর পূজা আর তাদেরই স্বার্থের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গাল ভরা বুলি আউড়িয়ে চলেছে এদেশের সরকার। একইসাথে শ্রমিক অঙ্গনে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং দলীয় সন্ত্রাসের পাশাপাশি আন্দোলনরত শ্রমিক ও নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে চলেছে। আজ প্রয়োজন শ্রমিক শ্রেণির স্বীয় স্বার্থে জাতীয় মজুরি, বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে নিম্নতম মজুরি, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন ও সরকারের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলা। পাশাপাশি শ্রমিক অঙ্গনে ক্রিয়াশীল সাম্রাজ্যবাদী সংস্থা, এনজিও, দালাল নেতৃত্বের স্বরুপ উন্মোচন করা।
সবশেষে সভাপতির বক্তৃতায় ধারাবাহিক। আন্দোলন-সংগ্রামের পথে দাবি আদায়ের স্বীকৃত পথে শ্রমিক শ্রেণিকে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সমাবেশ শেষ হয়।