বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জে মা ও মেয়েকে ধর্ষণের মামলায় এক আসামিকে যাবজ্জীবন দ-সহ পৃথক আরো দুটি মামলায় একজনকে যাবজ্জীবন এবং একজনকে মৃত্যুদ- দিয়েছেন আদালত। ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই দ-াদেশ দেন।
সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, দোয়ারাবাজার উপজেলার কচুকান্দি গ্রামের কলমদর আলীর ছেলে শামসুদ্দিন মিয়া ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ উপজেলার ঘিলাতলি গ্রামের এক নারী ও তার কিশোরী মেয়েকে আতœীয় বাড়ি যাওয়ার পথে আলাদাভাবে বেধে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ চার্জশীট প্রদান করে। আদালত স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আসামি শামসুদ্দিন মিয়াকে যাবজ্জীবন দ- প্রদান করেন। অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
তাহিরপুর উপজেলার উজান তাহিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির জনৈক ছাত্রীকে ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি একই গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে আবিদ হোসেন রিমন ঘরে ডুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ধর্ষিতা শিশুকন্যার চাচা পরদিন তাহিরপুর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পরবর্তীতে আসামি দোষ স্বীকার করে জবানবন্ধী প্রদান করে। মামলা দায়েরের পর দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জশিট প্রদান করে। স্বাক্ষ্য প্রমাণাদী পর্যালোচনা করে আদালত মঙ্গলবার আসামিকে যাবজ্জীবন দ-াদেশ প্রদান করেন এবং এক লক্ষ টাকা অর্থদ- প্রদান করেন।
এদিকে মধ্যনগর উপজেলার গলহা গ্রামের বিনয় রায়কে যৌতুক ও নারীনির্যাতনে স্ত্রীর মৃত্যুর মামলায় মৃত্যুদ- প্রদান করেছেন আদালত। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত বিনয় রায় মধ্যনগর উপজেলার গলহা গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জ উপজেলার শাহানগর গ্রামের ময়না রায় (২৬) কে বিয়ে করেন বিনয় রায়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধর করতেন তিনি। ২০১৪ সালের ৩০ জুলাই আসামি বিনয় রায় তার স্ত্রীকে বেধড় মারপিট করে। স্থানীয়রা স্ত্রীকে নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ময়না রায়। এ ঘটনায় ৬ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলা দায়ের করেন ওই নারীর ভাই মিন্টু চন্দ্র রায়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে মামলার চার্জশিট প্রদান করে। আদালত স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে গতকাল আসামিকে মৃত্যুদ-াদেশ প্রদান করেন।
সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি নান্টু রায় বলেন, পৃথক তিনটি মামলায় বিচারক এক আসামিকে মৃত্যুদ- ও দুই আসামিকে যাবজ্জীবন দ-াদেশ দিয়েছেন। এর আগেও একই সঙ্গে এই বিচারক একাধিক রায় দিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি দ্রুততার সাথে আন্তরিকভাবে কাজ করে মানুষের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করছেন।