হাওর ডেস্ক::
এক যুগের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে বড় বিপর্যয় দেখল যুক্তরাষ্ট্র; মূলধন সংকটের কারণে বন্ধ করা হল সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিবি)।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক এই ব্যাংকটি যুক্তরাষ্ট্রের বড় ব্যাংকগুলোর একটি; সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি খাতের বড় কোম্পানি ও উদ্যোক্তাদের ঋণ আসত এই ব্যাংক থেকে।
সিএনএন জানিয়েছে, শুক্রবার ব্যাংকটির কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর এর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইউএস ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি)।
এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকে জমা করা অর্থের কী হবে, তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেক কোম্পানি ও আমানতকারী।
এফডিআইসি বলছে, ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারী বা পাওনাদারদের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা করবে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল প্রটেকশন অ্যান্ড ইনোভেশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এসভিবির বীমাকৃত আমানত রক্ষা করবে ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স ন্যাশনাল ব্যাংক অব সান্তা ক্লারা।
এফডিআইসি সাধারণত প্রত্যেক আমানতকারীর আড়াই লাখ ডলার পর্যন্ত রক্ষা করে। তারা বলছে, বীমাহীন আমানতকারীরা তাদের অর্থের বিপরীতে প্রত্যয়নপত্র পাবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে অগ্রিম লভ্যাংশ হিসেবে এদের অর্থ পরিশোধ করা হবে। সিলিকন ভ্যালির সম্পদ বিক্রির সম্ভাব্য লভ্যাংশ থেকে তাদের অর্থ পরিশোধ করা হবে।
গত ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত এসভিবির সম্পদ ছিল প্রায় ২০৯ বিলিয়ন ডলারের এবং আমানত ছিল ১৭৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।
সিএনএন জানায়, এসভিবির চাকা ঘোরা বন্ধ হতে থাকে বুধবার। এদিন ব্যাংক এক ঘোষণায় জানায়, কিছু সম্পদ বিক্রি করে তাদের ১৮০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে। ব্যালেন্স শিট শক্তিশালী করতে ২২৫ কোটি ডলারের নতুন শেয়ার বিক্রি করবে তারা।
ওই ঘোষণার পর প্রধান কোম্পানিগুলোর মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয় এবং ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলে নেয় তারা। এতে এসভিবি ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপের শেয়ারের দাম ৬০ শতাংশ পড়ে যায়।
সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের পতন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংক খাতে এক দশকে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়
শুক্রবার পুঁজিবাজার খোলার আগেও ৬০ শতাংশ দরপতন হয় শেয়ারের। ফলে দুই দিনে দরপতন হয় ৮৪ শতাংশ।
বিপর্যয়ের পরিস্থিতিতে সবমিলিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার সকালে ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ করে নিয়ন্ত্রণ নেয় ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল প্রটেকশন অ্যান্ড ইনোভেশন।
বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার মধ্যে ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন মিউচুয়াল ব্যাংকের কার্যক্রম স্থগিত করেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা, যার সম্পদমূল্য ছিল ৩০৭ বিলিয়ন ডলার।
এর ১৫ বছর পর এসভিবি যখন বন্ধ হল, তখন ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতি টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে।
এসভিবির কার্যক্রম বন্ধ শুধু আমানতে নয়, ঋণ কার্যক্রম ও অন্যান্য অর্থায়নেও প্রভাব ফেলবে।
এফডিআইসি বলছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটির ঋণগ্রহীতাদের আগের মতোই স্বাভাবিকভাবে অর্থ পরিশোধ করে যাওয়া উচিৎ।