হাওর ডেস্ক::
বিএনপি আমলের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশ ও মানুষের উন্নয়ন হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “বিএনপি বলে বাংলাদেশটাকে নাকি আমরা ধ্বংস করে দিচ্ছি। এই যে এতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করলাম, এগুলো ধ্বংসের নমুনা কি? তা আপনারাই বলুন। তারা তো এতিমদের টাকা মেরে খায়। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চলমান।
“আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াই তারা এসে কমায়। আমরা প্রতিটি ঘর আলোকিত করতে চাই। আমরা যদি ডিজিটাল বাংলাদেশ না করতাম তাহলে তারা এতোকিছু বলতে পারত না। ২০২১ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। তা আমাদের ধরে রাখতে হবে। এখন আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ করার।”
শনিবার বিকালে ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এদিন তিনি ময়মনসিংহের শতাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে লুটেপুটে খায়, সে সময় খাদ্য ঘাটতি ছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “আল্লাহর রহমতে এখন আর খাদ্য ঘাটতি নেই। এক কোটি মানুষকে আমরা মাত্র ৩০ টাকা কেজিতে চাল কিনতে পারার সুযোগ করে দিয়েছি। অনেককে ১০ টাকা কেজিতে চাল দিচ্ছি। আবার যাদের একেবারে সামর্থ্য নেই তাদের বিনামূল্যে চাল দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই কোনো মানুষ কষ্ট না পাক।”
বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এরই মধ্যে ৩৫ লাখ মানুষ ঘর পেয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে আরও ৪০ লাখ মানুষ ঘর পাবে। বিএনপি-জামায়াতের আমলে এই অঞ্চল সন্ত্রাসের জনপদে লিপ্ত ছিল। লটুপাট, সন্ত্রাস, বাংলা ভাই সবই বিএনপির। তাদের সময় স্বাক্ষরতার হারও কম ছিল।
এত এত প্রকল্প কি দেশ ধ্বংসের নমুনা, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
“বিএনপি নেত্রী উর্দু ছাড়া কোনো বিষয়ে পাশ করেননি। জিয়াউর রহমান ম্যাট্রিক পাস। তার ছেলে কোন এক জায়গা থেকে একটি সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে শিক্ষিত হয়েছে। এজন্য তারা শিক্ষার দিকে অমনযোগী। আজকে সাক্ষরতার ৭৫ শতাংশের উপরে।
তিনি বলেন, “সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। স্কুলগুলো আধুনিকায়ন হচ্ছে। পাঁচ হাজার ২৭২টি ডিজিটাল ল্যাব করে দেওয়া হয়েছে। আজকে ঘরে বসেই ছেলেরা অনলাইনে আয় করতে পারছে। যুব সমাজের কর্মসংস্থানের জন্য বেসরকারিভাবে অনেক সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “খাদ্য ঘাটতি দূর করতে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। নিজেদের খাদ্য নিজেদের উৎপাদন করতে হবে। যাতে করে আমাদের কারো কাছে হাত পাততে না হয়। আমাদের মাটি উর্বর তাই আমরা নিজেরা ফসল ফলাব। আমার নিজের সব অনাবাদি জমি চাষের আওতায় এনেছি। মূল কথা হচ্ছে, উৎপাদন বাড়াতে হবে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। সেখানে যুবসমাজের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। বিনা জামানতে যুবসমাজকে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। যাতে করে তারা অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ময়মনসিংহ চমৎকার একটি বিভাগ, যেখানে শিক্ষা-স্বাস্থ্য-কৃষি-খাদ্য উৎপাদন সবকিছুতেই এগিয়ে যাবে। আমরা ময়মনসিংহ বিভাগ করেছি। যদি করোনাভাইরাস না হতো, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ না থাকত তাহলে এই বিভাগের কার্যক্রম আরও উন্নত হতো। বিভাগ হিসেবে ময়মনসিংহে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হবে। আমরা তা করে দেব। মানুষের জন্য আমাদের কাজ করাই মূল লক্ষ্য।”
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আগে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামূল আলমের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াবদুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।