স্টাফ রিপোর্টার::
হাওরের বোরো ফসল বৃষ্টি না হওয়ায় জ্বলে লালচে হয়ে যাচ্ছে। উদ্বিগ্ন জেলার পোনে চার লাখ চাষী পরিবার। একমাত্র ফসল গোলায় তুলতে না পারলে না খেয়ে থাকতে হবে তাদের। তাই ফসলের মায়ায় হাজার বছর লোকায়ত বিশ্বাস নিয়ে হাওরে জমির পাশে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনায় মেতেছিলেন হাজারো কৃষক। শুন্যে দুই হাত তুলে প্রার্থনা করেছেন বৃষ্টির জন্য। এভাবে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বিরা লোকাচার হিসেবে অনাবৃষ্টিকালে ফসলের জন্য বৃষ্টির প্রার্থনা করেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এমনই এক যৌথ প্রার্থনা হাওরের জাঙ্গালে করেছেন জামালগঞ্জের হালির হাওরপাড়ের কৃষকরা। সোমবার দুপুরে লম্বাবাক গ্রামের হাওরের পাশে বড়ো মাঠে এই প্রার্থনায় বসেছিলেন এলাকাবাসী। কাদো কাদো কণ্ঠে তারা প্রার্থনা করেছেন বৃষ্টির জন্য। সমবেত প্রার্থনায় মুসলিম ধর্মের বিভিন্ন বয়সের পুরুষেরা অংশ নেন। এদিকে একই দিনে জামালগঞ্জের নয়াহালট গ্রামেও বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছেন কৃষকরা।
জামালগঞ্জের কৃষক ও সংবাদকর্মী ওয়ালী উল্লাহ সরকার বলেন, কয়েক মাসের তীব্র খড়ায় হাওরের প্রাকৃতিক জলাধার শুকিয়ে গেছে। বোরো ভা-ার হাওরের একমাত্র বোরো ফসল নষ্ট হয়ে জ্বলে যাচ্ছে। এতে ফসলহানীর আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন কৃষকরা। শত শত বছর ধরে হাওরের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বি কৃষকরা বৃষ্টির জন্য লোকায়ত আচার হিসেবে প্রার্থনা করেন। আমাদের উপজেলার দুটি গ্রামে আজ সমবেত প্রার্থনায় বসেছিলেন হাজারো কৃষক। তারা আল্লার কাছে কায়মনো বাক্যে প্রার্থনা করেছেন বৃষ্টির জন্য।
জামালগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কায়সার আহমদ জানান, জামালগঞ্জ উপজেলায় চলতি বোরো মওসুমে ২৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় সেই ফসল এখন ঝূকির মুখে আছে। আমরা কৃষকদের উদ্বিগ্ন না হয়ে নানাভাবে ফসল সুরক্ষার পরামর্শ দিচ্ছি। তবে আজ তারা দুটি স্থানে লোকাচার হিসেবে প্রার্থনায় বসেছিলেন। তারা বৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করেছেন।
জামালগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ বলেন, আমাদের কৃষি এখনো লোকায়ত নির্ভর। লোকায়ত আচার ও বিশ্বাসের উপর ভর করে কৃষকরা এখনো চাষাবাদ করেন। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তারা প্রতিনিয়ত নানামুখি সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে। মওসুমে বৃষ্টি পাচ্ছেনা আবার অতি বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হচ্ছে। আজ আমার উপজেলার দুটি এলাকায় বৃষ্টির জন্য সমবেত প্রার্থনা করেছেন হাজারো কৃষক। তারা মাঠে কান্নার রোল তুলেছিলেন।