হাওর ডেস্ক::
মানহানির মামলায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে সোমবার জামিন দিয়েছেন ভারতের সুরাতের দায়রা আদালত। আদালতের এই রায়ের পর পরবর্তী শুনানির দিন, অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত রাহুলের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপও নেওয়া যাবে না। মোদি পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার দায়ে মামলাটি দায়ের হয়েছিল।
এ ছাড়াও রাহুলের বিরুদ্ধে যে সাবেক বিজেপি বিধায়ক ও গুজরাত সরকারের মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদি মানহানির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, তাকে ১০ এপ্রিলের মধ্যে বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এদিন আদালত থেকে বেরিয়ে রাহুল বলেন, ‘সত্যই আমার অস্ত্র’।
এই মামলায় কংগ্রেস নেতাকে দুই বছরের সাজার নির্দেশ দিয়েছিলেন সুরাতেরই ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ৩০ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে থাকা রাহুল। সাবেক কংগ্রেস সভাপতিকে পরবর্তী শুনানির জন্য আদালতে হাজির হতে হবে না।
কংগ্রেস সূত্রে জানা গেছে, দায়রা আদালতে নিম্ন আদালতের রায়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ পাওয়ার জন্য আর্জি জানান রাহুল। রাহুলের হয়ে আদালতে লড়েন তার আইনজীবী আর এস চিমা। আদালতে নিজেও উপস্থিত ছিলেন রাহুল। তার সঙ্গে ছিলেন বোন প্রিয়াংকা গান্ধী, কংগ্রেসশাসিত রাজস্থানের তিন রাজ্য—রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, ভূপেশ বঘেল এবং সুখবিন্দর সিংহ সুখু।
এদিকে রাহুলের আদালতে উপস্থিত থাকা নিয়ে সাবেক কংগ্রেস সভাপতিকে বিদ্রুপ করতে ছাড়েনি বিজেপি। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু সোমবার সকালে এক টুইটে লিখেছেন, ‘এক জন অভিযুক্ত উচ্চ আদালতে আবেদন জানানোর জন্য নিজে যাননা, যাওয়ার প্রয়োজনও পড়ে না। কিন্তু রাহুল গান্ধী বাচ্চাদের মতো দলবল নিয়ে ওখানে নাটক করতে গেছেন।’
ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রাহুলকে দুই বছরের সাজার কথা শুনিয়েছিলেন। এই সাজাপ্রাপ্তির কারণে লোকসভায় রাহুলের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যায়। জনপ্রতিনিধি আইন অনুযায়ী, দেশের আইনসভার কোনো সদস্য দুই বছর বা তার বেশি মেয়াদের জন্য সাজাপ্রাপ্ত হলে ছয় বছরের জন্য তার সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাবে। ওই সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তি কোনো নির্বাচনেও দাঁড়াতে পারবেন না।
তবে উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দিলে বা পুরনো রায় খারিজ করে দিলে অভিযুক্তের আইনসভার সদস্যপদ ফিরিয়ে দিতে হবে। যেমন খুনের চেষ্টার অভিযোগে নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত লক্ষদ্বীপের এনসিপি সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়জল সম্প্রতি লোকসভার সদস্যপদ ফিরে পেয়েছেন। কারণ কেরালা হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। সুরাতের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতও রাহুলকে উচ্চ আদালতে আপিল করার জন্য ৩০ দিন সময় দেন।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে কর্নাটকের কোলারে রাহুল বলেছিলেন, ‘সব চোরের পদবি কেন মোদি হয়?’ তার সেই অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য গুজরাতে মামলা রুজু হয়। তার ভিত্তিতেই রাহুলকে সাজার কথা শোনান সুরাতের ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা