হাওর ডেস্ক::
ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় ব্রি-২৮ ধান মাঠ থেকে তুলে নেবে সরকার। কৃষকরা যাতে এ ধান আর আবাদ না করেন সে জন্য তাঁদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
গতকাল রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বোরো ধান নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রি-২৮ ধান বাংলাদেশে জনপ্রিয়, চালটাও চিকন, উৎপাদনও ভালো, আসেও আগে। কিন্তু সব জাতই দীর্ঘদিন চাষ করলে গুণ কমে যায়, বিভিন্ন রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণে সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ব্রি ধান-২৮ জাতটা ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। অনেক জায়গায়ই চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কৃষক যাতে এ ধান আর আবাদ না করেন সে জন্য তাঁদের নিরুৎসাহিত করছি। ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত ব্রি-২৮ জাত মাঠ থেকে দ্রুত তুলে নেওয়া হবে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরে বোরোতে রেকর্ড দুই কোটি ২০ লাখ টনের বেশি চাল উৎপাদন হতে পারে। হাওরে এখন পর্যন্ত ৯০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। ক্ষেত থেকে প্রতিমণ ধান ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে কৃষকরা বিক্রি করতে পারছেন। ভালো দাম পাচ্ছেন। দেশের যেসব এলাকায় কৃষিযন্ত্র আছে সেখানে ধান কাটায় খরচ কম হচ্ছে। তবে যেসব এলাকায় শ্রমিকের সংকট আছে সেখানে মজুরি এখন বেশি।
কৃষিমন্ত্রী জানান, চলমান ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯ লাখ ৭৬ হেক্টর জমি। আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে। এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা দুই কোটি ১৫ লাখ টন চাল। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ লাখ টন বেশি চাল উৎপাদন হতে পারে। মেশিনে ধান কাটায় হাওরের ধান দ্রুত কাটা সম্ভব হয়েছে। এই মুহূর্তে হাওরের সাতটি জেলায় চার হাজার ৪৭০টি কৃষিযন্ত্র দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে। এর মধ্যে তিন হাজার ৮০০ কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও ৬৭০টি রিপার রয়েছে। ফলে ধান কাটায় খরচ কম হচ্ছে। কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন, ভালো দাম পাচ্ছেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘হাওরের সিলেটে ৯১, মৌলভীবাজারে ৯৭, হবিগঞ্জে ৮০, সুনামগঞ্জে ৯৬, কিশোরগঞ্জে ৮০, নেত্রকোনায় ৯৬ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯২ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। বিগত ১৪ বছরে কৃষিতে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে আমরা হাওরের কৃষককে ধান কাটার যন্ত্র দিচ্ছি। একটা যন্ত্রের দাম ২৮ লাখ টাকা হলে ২০ লাখ টাকা সরকার আর কৃষক মাত্র আট লাখ টাকা দিচ্ছেন। এটি একটি বিরাট উন্নয়ন।’
জানা গেছে, হাওরভুক্ত সাতটি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এ বছর বোরো আবাদ হয়েছে চার লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে