বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জে আগুনদামে বিক্রি হচ্ছে সব্জি। নি¤œ আয়ের অসহায় ও শ্রমজীবী মানুষেরা বিপাকে। মাছ মাংস ডিমের অস্বাভাবিক মূল্যের পর অনেকে সব্জির তরকারিতে কোনও রকম খাওয়া দাওয়া বহাল রাখলেও এখন সব্জির দামে সবারই নাভিশ্বাস ওঠেছে।
সরেজমিন শনিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ সব্জি বাজার ঘুরে দেখা গেছে খুচরো পর্যায়ে ১০০ টাকার কম কোনও সব্জির দাম নেই। করলা ১০০, বেগুন ১০০, টমেটো ১০০, শিম ২২০, পেপে ৩০, কাচাঁমরিচ ২৫০, মুলা ৮০, মুকি ১০০, শষা ৫০, আলু ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সব্জির মূল্যও বেশি। কয়েক মাস ধরে এই অবস্থা চললেও এখন মূল্য আরো বেড়েছে বলে জানান ক্রেতারা।
সব্জিবাজারে কথা হয় সদর উপজেলার ডুপিকোনা গ্রামের মজুর ইনসান মিয়ার সাথে। দৈনিক মজুর খেটে তিনি সংসার চালান। তার দুই সন্তান, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে সংসার। প্রতিদিন মজুরি করে ৫৫০ টাকা পান। মাঝে-মধ্যে কাজ পাননা।
ইনসান আলী বলেন, একদিনের রুজিতে অনে দুই দিনের সব্জি ও আর ডাইলভাতের ব্যবস্থা অয়না। অনে মাছ, মাংস ও ডিম খাওয়া ছাড়ি দিছি। খুব কষ্টত আছি। ইলা অবস্থা চললে গরিব মানুষ আনা খাইয়া মরবো।
কালিবাড়ি শ্রমবিক্রির হাটে কথা হয় পৈন্দা গ্রামের দিনমজুর জসিম মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, সারাদিন শরির খাটাইয়া ৫০০ টেকা পাই। ই রুজিতে অনে সংসার চলেনা। কাম না থাকলে মাঝে-মধ্যে আউরো ও গাঙো মাছ মারাত বারই। কোনওমতে খাওয়ার মাছ জোগার করতাম পারি। আগের মতো মাছও নাই। তিনি বলেন, কিন্তু সব্জি বাজারো যখন যাই তখন দাম শুইন্যা চওকো আন্দাইর দেখি। এক কেজি মুকি জীবনেও ১০০টাকায় কিনছিনা। বাইঙ্গন ৩০-৪০ টেকায় খাইছি। অনে ভাইঙ্গনের দামও ১০০ টেকা। বাজার ঘুরে নি¤œ আয়ের মানুষের কণ্ঠে সব্জির চড়া মূল্য নিয়ে এভাবেই ক্ষোভ লক্ষ্য করা যায়।
পাইকারি সব্জি বাজারের ব্যবসায়ী নাজমুল হক বলেন, গত কয়েক মাস ধরে সব্জির দাম অস্বাভাবিক। এ কারণে আমাদেরও বিক্রি কম হচ্ছে। ঘুরতিপথে বগুড়া রাজশাজী থেকে সব্জি আসে। এ কারণে কেরিং দ্বিগুন হয়ে যায়। এর মধ্যে এখন আবার দামও বেশি। মানুষ আগের মতো এখন সব্জিও কিনেনা।
কবি ইকবাল কাগজী বলেন, নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দামই এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ধনীদের বাজারমূল্য নিয়ে কোনও ক্ষোভ না থাকলেও সাধারণ মানুষ মূল্যের চাপে সংসার চালাতে গিয়ে পিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শ্রমিক, দিনমজুর, স্বল্প আয়ের মানুষরা নিদারুণ কষ্টে আছে।
সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল বলেন, সরকার বিভিন্ন পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর বেশি কেউ নিলে প্রচলিত আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। তবে এবার সব্জির দাম বেশি বলে তিনি স্বীকার করেন।