স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ-৪ নির্বাচনী এলাকার সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে ২৭ ডিসেম্বর বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত গণসংযোগ ও নির্বাচনী সভা করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক। প্রতিটি সভাতেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ এলাকার সাধারণ মানুষ উপস্থিত হয়ে ড. মোহাম্মদ সাদিককে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে নৌকা প্রতীকে আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সাধারণ মানুষ এসময় গত ১৫ বছর প্রতিটি এলাকার উন্নয়ন বঞ্চনার তথ্য তুলে ধরে আগামীতে তিনি নির্বাচিত হলে উন্নয়নযজ্ঞ পরিচালনার দাবি জানান।
উন্নয়ন বঞ্চিত সাধারণ মানুষের বক্তব্যের জবাবে ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, আমার আর আপনাদের মধ্যে যোগাযোগে মাঝখানে কোনও দালাল ও এজেন্ট লাগবেনা। আপনারা ৫ বছরের জন্য আমাকে কামলা হিসেবে পাবেন। আমার বাড়ি হবে আপনাদের বাড়ি। আমি আপনাদের এলাকায় এসে আপনাদের সঙ্গে কথা বলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন তালিকা করে তা বাস্তবায়ন করবো।
মোহনপুর গ্রামের মসজিদের পূর্বের মাঠে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী জনসভায় ড. মোহাম্মদ সাদিক আরো বলেন, সারাদেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের গতিধারার সঙ্গে সুনামগঞ্জ-৪ আসন যেতে পারে নাই। উন্নয়নের ট্রেনের সঙ্গে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের বগি লাগে নাই। এই বগি এখনো একা পড়ে আছে। অথচ উন্নয়নের জাহাজ বহুদূরে চলে গেছে। শুধু ডিঙ্গি একা একা ঘুরছে। এর কারণ আমরা জানি। তিনি আরো বলেন, উন্নয়নের যে গতি আছে সেটা যিনি ছিলেন বুঝতে পারেন নাই। সেই গতি বুঝতে না পেরে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের মানুষ আরো দুখি হয়েছে। গত ১০ বছরে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ১০০ বছর এগিয়ে গেছে। অথচ আমাদের সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর ৫০ বছর পিছিয়েছে। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ দেখে আজকে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের মানুষ বিষ্মিত হন। অথচ পৈন্দা নদীতে, ফতেপুরে, ধারারগাঁওয়ে কয়েক গজের ব্রীজ, কয়েকটা রাস্তা, স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য আজ মানুষ হাহাকার করে। কেন এগুলো হয়না এই জবাব কাউকে না কাউকে দিতেই হবে, সেই কৈফিয়ত দিতেই হবে।
তিনি বলেন, আপনারা ভালো ভালো গাড়ি চালাবেন, বড় বড় বক্তৃতা দিবেন, জনগনের ভোট নিয়ে ইচ্ছামতো টিআর কাবিখা খাবেন, কোটারি গ্রুপ তৈরি করবেন, আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে সংসদে গিয়ে আওয়ামী লীগকে বঞ্চিত করবেন। তা আর হবেনা। এই বঞ্চানার ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবেনা। এই দীর্ঘশ্বাসের ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবেনা। এই অশ্রুপাত, এই নির্ঘুম রাত কাউকে ক্ষমা করবেনা।
তিনি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি আপনারা এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে নৌকা প্রতীকে আমাকে পাশ মার্ক দিলে, এক মন দিয়ে ৫ বছরের জন্য কামলা কিনলে, আমার বাড়ি হবে আপনাদের বাড়ি। আমার বাড়ি ও মনের দরোজা আপনাদের জন্য খোলা থাকবে। আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে কোনও দালাল, এজেন্ট লাগবেনা। আপনাদের এখানে এসেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন প্রকল্প তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে ও মোহনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি জনিক মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, হাজী আবুল কালাম, মনীষ কান্তি দে মিন্টু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জিয়াউল হক, সবুজ কান্তি দাস, শীতেশ তালুকদার মঞ্জু, সুরমা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমির হোসেন রেজা, বিমান কান্তি তালুকদার, মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মঈনুল হক, মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হেমন্ত তালুকদার প্রমুখ। পরে ড. মোহাম্মদ সাদিক পৈন্দা বাজার ও বৈষভেড় গ্রামেও নির্বাচনী প্রচারসভায় বক্তব্য দেন।