হাওর ডেস্ক::
‘চিঠঠি আয়ি হ্যায়’ এর মত জনপ্রিয় গানের গায়ক, ভারতের প্রখ্যাত গজল শিল্পী পঙ্কজ উদাস আর নেই।
বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে এই শিল্পীর মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
দীর্ঘদিন ধরেই নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন পঙ্কজ উদাস। তার মেয়ে নায়াব উদাস ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে বাবার মৃত্যুর খবর দেন।
উদাস পরিবারের বিবৃতিতে বলা হয়, “দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমরা জানাচ্ছি, পদ্মশ্রী শিল্পী পঙ্কজ উধাস ২৬ ফেব্রুয়ারি মারা গেছেন।”
‘নাম’, ‘সাজন’, ‘মোহরা’র মত হিন্দি সিনেমায় প্লেব্যাক করে তুমুল জনপ্রিয়তা পান পঙ্কজ উদাস। ‘চাঁদনি রাত মে’, ‘না কাজরে কি ধার’, ‘অর আহিস্তা কিজি বাতি’, ‘এক তরফ উসকা ঘর’, ‘থোড়ি থোড়ি পিয়া করো’র মত গজল গেয়ে তিনি শ্রোতাদের মন জয় করে নেন।
কিংবদন্তি এ শিল্পী বিশ্বজুড়ে যেমন কনসার্ট করেছেন, তেমনই নিজের নামে অনেক অ্যালবামও বের করেছেন।
আনন্দবাজার লিখেছে, ১৯৫১ সালের ১৭ মে গুজরাটের জেটপুরে জন্ম নেওয়া পঙ্কজ উদাস ছিলেন তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। পরিবারেই তার সংগীতে হাতেখড়ি। সংগীতের প্রতি উৎসাহ দেখে বাবা কেশুভাই তার তিন সন্তানকে রাজকোটের সংগীত অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করে দেন।
শুরুতে তবলার প্রশিক্ষণ নিলেও পরে গুলাম কাদির খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নিতে শুরু করেন পঙ্কজ। পরে গোয়ালিয়র ঘরানার জনপ্রিয় শিল্পী নবরং নাগপুরকরের কাছে তালিম নিতে মুম্বাই যান পঙ্কজ।
সিনেমার গানে তার অভিষেক হয় ১৯৭২ সালে ‘কামনা’ চলচ্চিত্রের মাধ্য়মে। তারপর ‘সাথ সাথ’, ‘উৎসব’, ‘প্রেম প্রতিজ্ঞা’র মত চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন।
১৯৮৬ সালে ‘নাম’ সিনেমায় তার গাওয়া ‘চিঠঠি আয়ি হ্যায়’ গানটিই তাকে তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয়। ১৯৯১ সালে ‘সাজন’ সিনেমার ‘জিয়ে তো জিয়ে’ও তাকে ‘হিট গান’র তকমা এনে দেয়।
১৯৮০ সালে প্রকাশিত হয় পঙ্কজ উদাসের গজলের অ্যালবাম ‘আহাত’। এরপর চার দশকে তার অর্ধশতাধিক অ্যালবাম বাজারে এসেছে।
পঙ্কজ উদাস গেয়েছেন বাংলাতেও । ‘চোখে চোখ রেখে’, ‘তোমার চোখেতে ধরা’ গানগুলো তার কণ্ঠে জনপ্রিয়তা পায়।
ভারত সরকার ২০০৬ সালে পঙ্কজ উদাসকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে কণ্ঠশিল্পী সোনু নিগম সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “আমার শৈশবের গুরুত্বপূর্ণ একটা অধ্যায় পঙ্কজ উদাস, তাকে হারিয়ে ফেললাম। আপনাকে আজীবন মিস করব। আপনার মৃত্যুর খবরে শোকাহত। আমাদের জীবনে থাকার জন্য ধন্যবাদ।’’