হাওর ডেস্ক::
সোমবার (১৩ মে) বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বাবা, মা ও ছোট ভাইয়ের পাশে তাকে দাফন করা হয়। আর বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
এরআগে, সকালে দলীয় কার্যালয় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মুক্তিভবনের সামনে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মরদেহ নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষতো বটেই, শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল। লাল সালামে শেষ বিদায় জানানো হয় সাম্যের পৃথিবী গড়ার অন্যতম সৈনিক কমরেড হায়দার আকবর খান রনোকে। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় সিক্ত হন বাম ধারার আদর্শ থেকে একচুলও বিচ্যুত না হওয়া মেহনতি মানুষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর এই কমিউনিস্ট নেতা। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার জমিন তৈরির ক্ষেত্রে তার ভূমিকাকে গার্ড অব অনারে ভূষিত করে বাংলাদেশ।
পরিচিত ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা বলেন, সারা বিশ্বেই বাম ঘরানার বহু মানুষ একটা সময় ডান পন্থায় ঝুঁকে পড়তে বাধ্য হন। কিন্তু ৬ দশকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এমন কোনো নজির নেই হায়দার আকবর খান রনোর। আদর্শ আর ন্যায়ের প্রতি অবিচল ‘রনো ভাই’। ৮২ বছরের জীবনে রাজনৈতিক কারণে চারবার কারাবরণ এবং সাতবার আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছেন এই কমিউনিস্ট নেতা।
আরও পড়ুন: রনোর শেষ বিদায়ে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা
হায়দার আকবর খান রনো বিশ্বাস করতেন, মানুষের ইতিহাস হলো সাম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ইতিহাস। স্পার্টাকাস থেকে শুরু করে সূর্যসেন- সবাই মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করে গেছেন। ফলে পুঁজিবাদের পতন অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু ইতিহাসের চূড়ান্ত রায় এখনও অধরা। জীবিত রনো মৃত্যুর পর আরও বেশি বলবান- সেই বিশ্বাস তার আদর্শিক সৈনিকদের।
গত শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মার্কসবাদী তাত্ত্বিক হায়দার আকবর খান রনো। তিনি ১৯৪২ সালের ৩১ আগস্ট অবিভক্ত ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস নড়াইলের বরাশুলা গ্রামে।
তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও নেতা। একাধিক বইয়ের লেখক তিনি। ২০১০ সালে মতভিন্নতার কারণে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ছেড়ে হায়দার আকবর খান সিপিবিতে যোগ দেন। ২০১২ সালে সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। এরপর তিনি দলটির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।