হাওর ডেস্ক::
বুধবার (১৫ মে) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত আইসিপিডি-৩০ গ্লোবাল ডায়ালগ অন ডেমোগ্রাফিক ডাইভারসিটি অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন তিনি।
এদিকে কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে,
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। এতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আবারও ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ উঠে আসে। ফিলিস্তিনে হাজারো নারী-শিশু যুদ্ধের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্বিষহ জীবন পার করছে৷ তাদের রক্ষায় জাতিসংঘকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যুদ্ধ নয়, শান্তি চায়৷
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। দেশের মানুষ প্রাথমিক যে স্বাস্থ্য সেবা পাবে, সেই সুযোগটা বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে আমাদের জনসংখ্যা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্থবিরতা নেমে আসে। তবে বর্তমানে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে কাজ করছে সরকার। এজন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করা জরুরি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত আমরা সরকারে ছিলাম না। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। আমাদের দেশের মানুষ প্রাথমিক যে স্বাস্থ্য সেবা পাবে, সেই সুযোগটা বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে আমাদের জনসংখ্যা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্থবিরতা নেমে আসে। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে কাজ করছে বাংলাদেশ। এজন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করা জরুরি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ সংগ্রামের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর জাতির পিতার নেয়া পদক্ষেপ অনুসরণ করে সকলের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে, নতুন জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করা হয়। বিশেষ করে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছানোর জন্য সারা দেশে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন কাজ শুরু করি। সেই সময় জাতীয় পুষ্টিনীতি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ, নারী শিক্ষা বিস্তার এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে ছিল আমাদের আন্তরিক প্রয়াস। এরপর আবার ক্ষমতার পালাবদলে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসে। এরপর ক্ষমতায় এসেই কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। দেশের মানুষ যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাটা পাবে, সেই সুযোগটা বন্ধ হয়ে যায়। এরফলে জনসংখ্যা উন্নয়ন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় স্থবিরতা নেমে আসে।
তিনি আরও বলেন,
স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালে জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দ্বায়িত্ব হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির পিতার নিদের্শে ’৭৩-৭৮ সাল পর্যন্ত প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হয়। তিনি একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ন্যাশনাল কাউন্সিল কমিশন গঠন করেন। জাতির পিতাকে হত্যা করার পরে এদেশে অগণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসে। এরপর সমস্ত অর্জনগুলো একে একে নষ্ট করে দেয়া হয়।
২০০৯ সালে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এরপর আইসিপিডি প্রোগ্রাম অব অ্যাকশনে ১৫টি মূলনীতি বাস্তবায়নে জাতীয় জনসংখ্যা নীতি-২০১২ প্রণয়ন করি। মাতৃমৃত্যু ও নবজাতক মৃত্যু হ্রাস, মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সেবা, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি ও পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাপক কর্মসূচি শুরু করা হয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য বন্ধ হওয়া কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো আবার চালু করা হয়।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশকে আমি ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। সে লক্ষ্যে কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারি নানা উদ্যোগে বাল্যবিয়ের হার কমে আসছে। নানাভাবে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
বুধ ও বৃহস্পতিবার এ দুদিন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে বৈশ্বিক এ সংলাপ। বাংলাদেশ, বুলগেরিয়া ও জাপান সরকারের যৌথ উদ্যোগে এ সংলাপের আয়োজন করছে ইউএনএফপিএ।
বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা এবং বিশ্বের স্থানান্তরিত জনসংখ্যার সুযোগগুলো অন্বেষণ করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে এ সংলাপ। চলতি বছর ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিপিডি)।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ইউএনএফপিএ’র নির্বাহী পরিচালক ড. নাতালিয়া কানেম, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ড. রোকেয়া সুলতানা, জাপানের পার্লামেন্টারি ভাইস মিনিস্টার হোসাকা ইয়াসুশি এবং বুলগেরিয়া সরকারের প্রতিনিধিদের যোগ দিয়েছেন।