হাওর ডেস্ক::
গত ২১ এপ্রিল রাজস্থান রাজ্যের বাঁশবাড়া কেন্দ্রে বিজেপির এক নির্বাচনী জনসভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ওই জনসভায় তিনি মুসলিমবিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের। বিরোধীরা বলছেন, লোকসভার প্রথম দফায় ভোটের হার আশানুরূপ না হওয়ায় মোদি সরাসরি ধর্মীয় মেরুকরণের পথে হাঁটলেন।
জনসভায় প্রধান বিরোধী দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসকে (আইএনসি) জড়িয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান মোদি। বলেন,
কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে দেশের সম্পদ মুসলিমদের মধ্যে বণ্টন করে দেবে। হিন্দুদের পারিবারিক সোনা-রুপার সঙ্গে বিবাহিত নারীদের গলায় পরা পবিত্র মঙ্গলসূত্র পর্যন্ত তারা কেড়ে নিয়ে বাঁটোয়ারা করে দেবে।
সিএনএনের প্রতিবেদন মতে, ওই মন্তব্যে মোদি মুসলিম শব্দটি সরাসরি উল্লেখ করেন। এছাড়াও ‘অনুপ্রবেশকারী’ ও ‘যারা অনেক সন্তান জন্ম দেয়’ এমন দুটি শব্দ ও শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করেন তিনি। এই দুটি শব্দ দিয়ে বিজেপির নেতারা সাধারণত মুসলিম সম্প্রদায়কে বুঝিয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন: মোদির বিরুদ্ধে নির্বাচনী জনসভায় ‘মুসলিমবিদ্বেষী’ মন্তব্যের অভিযোগ, তুমুল বিতর্ক
জনসভায় উপস্থিত বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে মোদি বলেন,
যখন তারা (কংগ্রেস) ক্ষমতায় ছিল, তারা বলেছিল, সম্পদের ওপর মুসলিমদের অগ্রাধিকার। তারা তোমাদের সমস্ত ধন-সম্পদ একত্র করে যাদের বেশি সন্তান আছে তাদের মধ্যে বণ্টন করে দেবে। তারা অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে বিতরণ করবে।
মোদির এই বক্তব্য নিয়ে বেশ তর্ক-বিতর্ক হয়। তার বিরুদ্ধে ‘মুসলিমবিদ্বেষী’ মন্তব্য করার অভিযোগও উঠে। তবে, মঙ্গলবার নিউজ১৮ কে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা মোদি বলেন,
তিনি কেবল মুসলিমদের কথা বলেননি, প্রতিটি দরিদ্র পরিবারের কথা বলেছেন।
মোদি জানান, তিনি মুসলিমদের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে মার্কেটিং করেন না।
তিনি বলেন, ‘আমি ভোট ব্যাঙ্কের জন্য কাজ করি না। আমি সবাইকে নিয়ে, সবার উন্নয়নে বিশ্বাস করি।’
আরও পড়ুন: আত্মহত্যা করা কৃষকদের ‘মাথার খুলি’ নিয়ে মোদির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
মোদি বলেন,
আমি হতবাক। আপনাকে কে বলেছে যে, যখনই কেউ বেশি সন্তান নিয়ে কথা বলে, তারা মুসলিমদের নিয়ে কথা বলছে। কেন আপনারা মুসলিমদের প্রতি এত অবিচার করছেন? দরিদ্র পরিবারেরও এই অবস্থা। যেখানে দারিদ্র্য আছে, সেখানে বেশি সন্তান আছে।
তিনি বলেন,
আমি হিন্দু বা মুসলিম উল্লেখ করিনি। নির্বিশেষে বলেছি, যে যতগুলো সন্তানের যত্ন নিতে পারবে, ততগুলোই নেয়া উচিত। এমন পরিস্থিতি তৈরি করা উচিত নয় যে, সরকারকে আপনার সন্তানের দেখাশোনা করতে হয়।
গুজরাটের মুখ্যামন্ত্রী থাকাকালীন গোধরার দাঙ্গার কথা উল্লেখ করে মোদি বলেন, বিরোধীরা ২০০২ (গোধরা দাঙ্গা) সালের পর মুসলিমদের মধ্যে আমার ভাবমূর্তি ‘কলঙ্কিত’ করেছিল।
আরও পড়ুন: লোকসভা নির্বাচন /তিন দফার ভোটের পর কতটা চাপে মোদি?
এই লোকসভা নির্বাচনে মুসলিমরা তাকে ভোট দেবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ আমাকে ভোট দেবে।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন,
যেদিন আমি হিন্দু-মুসলিম করা শুরু করব, সেদিন আমার সরকারি কোনো রাজ্যে থাকার অধিকার থাকবে না।
তিনি বলেন,
আমি হিন্দু-মুসলিম করব না। এটা আমার অঙ্গীকার।